0
  Login
ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে যে সকল গুণাবলী থাকতে হয়

ফেসবুক বিজনেসে সফল হতে যে সকল গুণাবলী থাকতে হয়

সফলতা কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর নির্ভর করে না। অনেকগুলো বিষয়ের সমন্বয় একজন মানুষকে, একটি বিজনেসকে সফল করে।

অনলাইন বা অফলাইন সব ধরনের বিজনেসে সফল হতে হলে যে বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অধিকাংশ এক্সপার্টরা যেগুলোর সাথে একমত হয়েছেন সে বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

১. শক্তি এবং উৎসাহ

বিখ্যাত একটি উক্তি রয়েছে, যে কাজটি করতে আপনি ভালোবাসেন সেই কাজটি আপনি করুন।  এতে আপনি কখনোই কাজের মধ্যে থাকবেন না ।

একজন সফল উদ্যোক্তা তার কাজটি করতে ভালোবাসেন। তিনি তার কাজের মধ্যে শক্তিপান, তিনি সর্বদা উদ্যমী এবং নতুন কিছু শেখার আগ্রহ তার মধ্যে  সর্বদা থাকে।

বিজনেস অনলাইন হোক কিংবা অফলাইনে, আপনাকে কঠোর নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করে যেতে হবে এবং সেই পরিশ্রম সার্থকতা পায়, যে পরিশ্রম সর্বোচ্চ শক্তির উৎস দ্বারা পরিচালিত।

 

২. ধৈর্য

ধৈর্য সকল গুনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।  ধৈর্যশীল মানুষের কাছে সফল ধরা দেয়। বিজনেস শুরু করার পরপরই রাতারাতি কেউ সফল হয় না।

বিজনেসে কখনো সফলতা থাকে, কখনো ব্যর্থতা থাকে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করে যারা এগিয়ে যেতে পারে তাদের জন্যই সফলতা পুরস্কার হয়ে আসে।

অনলাইন বিজনেসের  ক্ষেত্রে ধৈর্য সবার প্রথমে প্রয়োজন। মানুষ আপনাকে সরাসরি না দেখে শুধুমাত্র আপনার প্রোডাক্ট এর ছবি এবং তার বর্ণনা পড়ে কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

তাই অনলাইন বিজনেস পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে আপনাকে হতে হবে ধৈর্যশীল।

 

৩. হতে হবে আত্মবিশ্বাসী

আত্মবিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ব্যক্তি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারে না তাকে অন্যরা কখনোই বিশ্বাস করবে না।

আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে, আপনি যে ব্যবসা পরিচালনা করছেন সেটিতে নিশ্চয়ই সফলকাম হবেন। সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, লক্ষ্য স্থির করে সেদিকে আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যাবেন।

অনলাইন বিজনেসের প্রথমদিকে পর্যাপ্ত সাড়া না পাওয়া ও কাস্টমারদের নেগেটিভ কমেন্ট অথবা নিন্দুকদের সমালোচনায় অনেকেই শুরুতেই হতাশ হয়ে ছিটকে পড়ে যায়।

আপনাকে জানতে হবে কিভাবে নেতিবাচক ভাবনা পরিহার করে আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়।

 

৪. অধ্যবসায়

একবার না পারিলে দেখো শতবার।  আজকে আমি বিফল হয়েছি তাই কালকে আমি সফল হবো না,  এমনটি কেউ বলে দিতে পারে না।

পৃথিবীর অনেক বড় বড় বিজনেস কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করে সফল হয়েছে। অধ্যবসায় তাদের অন্যতম অস্ত্র।  এই মহান গুনটি আপনাকে অর্জন করতে হবে।

 

৫. অভিযোজন ক্ষমতা

এই পৃথিবীতে তারাই সফলকাম হয় যারা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।

একজন সফল উদ্যোক্তা মার্কেটের পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রতি সব সময় সচেতন, নতুন টেকনোলজি নতুন নতুন সমস্যা নিত্যনতুন কৌশল ও মার্কেট প্রতিযোগিতার বিষয়ে সর্বদা সচেতন থাকে।

তারা খুব দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়, প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সফলকাম হয়।

 

৬. ঝুঁকি সহনশীলতা

বিজনেসে ঝুঁকি থাকবেই।  আপনাকে জানতে হবে  বিজনেসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো  কি কি।

থাকতে হবে ব্যাকআপ প্ল্যান,  প্ল্যান রেডি করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যবস্থা থাকতে হবে,, করতে হবে মার্কেট এনালাইসিস।

ঝুঁকি সহনশীলতা মানে এমন নয় আপনি সব সময় ঝুঁকিকে গ্রহণ করার মানসিকতা রাখবেন। আপনি উদ্বুদ্ধ ঝুঁকিকে কৌশলগতভাবে কতটা কমিয়ে আনতে পারেন সেটি মুখ্য।

 

৭. সৃষ্টিশীলতা

একজন ভাল উদ্যোক্তার মধ্যে সৃষ্টিশীলতা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে প্রোডাক্টের লাইফ সাইকেল ক্রমাগত কমে আসছে। কারণ প্রচুর নতুন নতুন প্রোডাক্ট খুব স্বল্প সময়ে বাজার দখল করছে, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে হতে হবে সৃষ্টিশীল।

পুরনো সৃষ্টিকে নতুনরূপে বারবার ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা রাখতে হবে।

 

৮. দৃষ্টিশক্তি

যেখানে সাধারন মানুষেরা কিছুই দেখতে পায় না ব্যবসায়ীরা সেখানে সুযোগ দেখেন।

তারা প্রতিনিয়ত মার্কেটের অবস্থা, প্রোডাক্ট রেনোভেশন, কাস্টমারদের পছন্দ-অপছন্দ ও চাহিদার কথা চিন্তা করেন।

যখনই কোন একটি সম্ভাবনার রাস্তা  খুঁজে পান সেটিকে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা এবং সঠিক সময়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ব্যবসায় মুনাফা অর্জন করেন।

সুযোগ কারো জন্য অপেক্ষা করে না। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ সম্ভাব্য সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

 

৯. দৃষ্টিভঙ্গি

সাধারণ মানুষ এবং একজন উদ্যোক্তার মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি।  বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে দেখার ধরন।

প্রশ্ন আসতে পারে দৃষ্টিভঙ্গি বিজনেসের জন্য কি ধরনের গুরুত্ব রাখে।  একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে খুঁজে পাই তার  দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে।  একজন রুচিশীল মানুষ সর্বদা রুচিশীল মানুষকে আকৃষ্ট করে।

বিজনেস পরিচালনার ক্ষেত্রে, আপনি কাস্টমারদের জন্য প্রোডাক্ট ও সার্ভিস ডিজাইন করছেন। তাই সঠিক প্রোডাক্ট ও সার্ভিসটি তৈরি করতে হলে আপনাকে বুঝতে হবে কাস্টমারদের রুচি এবং পছন্দ।

এক্ষেত্রে তাদের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বিজনেসের মূল পার্থক্য তৈরী করে দেয়।

 

১০. নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা

সবাই নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয় না। একজন মানুষ তার দক্ষতা এবং যোগ্যতার  দ্বারা অন্যকে অনুপ্রাণিত করে, উৎসাহিত করে তাদের মধ্যে কাজ করার উদ্দীপনা তৈরি করে।

একজন ভাল উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা

 

১১.পরিকল্পনা

কিছু করার পূর্বে সে সম্পর্কে চিন্তা করাকেই পরিকল্পনা বলে। প্রতিটি কাজের জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন, পরিকল্পনা যত সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পীত হবে ততই  সফল হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। কোন সফলতাই পরিকল্পনা ছাড়া হঠাৎ করে পাওয়া সম্ভব নয়.

 

১২. দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা

সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হলে পিছিয়ে পড়তে হয়। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা আবশ্যক।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় অবশ্যই স্থির থাকবেন, ফোকাসড থাকবেন। অনেক সময় সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে। ভীতসন্ত্রস্থ হবার কিছু নেই।

আপনি যত দ্রুত এবং সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন বিজনেসের জন্য ততই মঙ্গল।

 

১৩. আত্মউন্নয়ন

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেকেই বিশেষ পরিচালনার জন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে। একসময় সেই প্রতিষ্ঠান যদি তাকে সহায়তা করতে অসম্মতি প্রকাশ করে তবে ব্যবসায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হন।

আমরা বিশ্বাস করি আত্ম-উন্নয়নে। বিজনেস সম্পর্কে আপনি নিজে জানুন, শিখুন এবং প্রয়োজনে অন্যের সহায়তা নিন। তাহলে পরিস্থিতির কারণে কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান যদি আপনাকে ছেড়ে যায়, আপনি থেমে থাকবেন না।

 

Facebook Comments

Leave a Reply