0
  Login
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার

বর্তমান সময়ে মানুষ ফিল্যান্সিং আউটসোর্সিং এর ওপরে অনেক বেশি ঝুঁকে পরেছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং টা কি?  অনেকে আউটসোর্সিং ও অনলাইনে আয় বিষয় দুটোকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং জিনিসটা কি?

ফ্রিল্যান্সিং:
বর্তমান সময়ে তরুনদের কাছে সবচাইতে আলোচিত একটি শব্দ টি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) । ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর অর্থ হলো স্বাধীন বা মুক্তপেশা। অন্যভাবে বলা যায়, নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করা কে ফ্রিল্যান্সিং বলে। এ ধরণের পেশাজীবিকে বলা হয় ফ্রীলেন্সার (Freelacer) বা স্বাধীনপেশাজীবি।

চাকরীজীবিদের মতো এরা বেতনভুক্ত নয়। কাজ ও চুক্তির উপর নির্ভরকরে আয়ের পরিমাণ কম বা অনেক বেশি হতে পারে, তবে স্বাধীনতা আছে, ইচ্ছা মতো ইনকামের সুযোগ ও আছে, । এজন্য স্বাধীনমনা লোকদের আয়ের জন্য এটা একটা সুবিধাজনক পন্থা।

আধুনিক যুগে বেশিরভাগ মুক্তপেশার কাজগুলো ইন্টারনেট মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। ফলে মুক্ত পেশাজীবীরা ঘরে বসেই তাদের কাজ করে উপার্জন করতে পারেন। এ পেশার মাধ্যমে অনেকে প্রচলিত চাকরি থেকে বেশি আয় করে থাকেন, তবে তা আপেক্ষিক। ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ হওয়াতে এ পেশার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি হাজারো ক্লায়েন্টের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ঘটে। যার কারণে বর্তমানে ছাত্র- ছাত্রী এবং অনেক চাকুরীজীবি এই পেশায় আসছেন।

বর্তমানে আউটসোর্সিং হচ্ছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের তৃতীয় ক্ষেত্র। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের একটা বিশাল বাজার।

 

আউটসোর্সিং:
যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাঁর নিজের বা প্রতিষ্ঠানের কাজ ইন-হাউজ না করে বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয় তখন সেটি হচ্ছে আউটসোর্সিং।

 

কেন ফ্রিল্যান্সিং সেরা?

শিক্ষাজীবন শেষে নিজের পেশা বেছে নিতে হয়। ব্যক্তিজীবন, পরিবার আর পেশাজীবনের সবচেয়ে ভাল সমন্বয়কেই ভাল থাকা বলে মনে করি আমি। এই ভাল থাকার জন্য প্রধানত যে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন তা হচ্ছে- স্বাধীনতা, স্বাচ্ছন্দ এবং পর্যাপ্ত আয়। চলুন দেখি ফ্রিল্যান্সআউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু সুবিধা এ ক্ষেত্রগুলোতে পেতে পারি।

১. আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন আপনি কখন কাজ করবেনউদাহরণ হিসেবে বলা যায়- আমি প্রতিদিন কাজ করি রাত এগারোটা থেকে সকাল ছয়টা, দুপুর পর্যন্ত ব্যক্তিগতপারিবারিক কাজ করে দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘুমাই। এভাবে কাজ করতে আমাকে কেউ বাধ্য করেনি। আমার কাছে এই শিডিউলটা সুবিধাজনক মনে হয় তাই এভাবে করি। কোনদিন ইচ্ছা হলো আজ রাতে কাজ করবো না, অন্য সময়ে করবো, তাতেও কেউ নিষেধ করবে না। কিন্তু আগেরবছরের কর্মজীবেন আমি কখনো ভাবতে পারিনি অফিসে বস্কে বলবো আজ আমি সকালে অফিসে না গিয়ে সন্ধ্যায় যাব বা দুদিন অফিসে না গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবো!

২. আপনিই সিদ্ধান্ত নেবেন কোথায় বসে কাজ করবেনএক্ষেত্রেও আমার নিজের কথা বলা যায়। আমার পার্সোনাল ডেস্কটা আমার বেডরুমেই। আপনি কোন চাকরি করেন কিংবা অন্য কোন ব্যবসা করেন, বেড়াতে ইচ্ছা হলেই আপনি বেড়াতে যেতে পারবেন না। যদি চাকরী হয় তাহলে ছুটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে, ব্যবসা হলে আপনার প্রতিষ্ঠান ফেলে যেতে হবে। এরকম ভ্যাগাবন্ড ফ্যামিলি তৈরি তো দূরের কথা, এমন কিছু স্বপ্ন দেখতেও দ্বিধা হবে! এরা সবাই বছরের পর বছর দেশে বিদেশে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এদের কাজ থেমে থাকে না। এরা যেখানে যায় এদের অফিসও সেখানে। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার ল্যাপটপ আর একটা ছোট্ট ট্রাভেল ব্যাগই যথেষ্ট। আপনাকে অফিসে যেতে হবে না, বরং অফিসই আপনার সাথে যাবে। কাজের জন্য আর কতটা স্বাধীনতা চান?

৩. লোকাল বিজনেসের সাথে এটার সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে, এক্ষেত্রে আপনার ব্যবসাক্ষেত্র বিশ্বব্যাপি। ফলে গ্রাহকসংখ্যা বহুগুণ বেশি। এজন্য কাজেরও কোন অভাব নেই। এখানে আপনি সার্ভিস প্রোভাইডার এবং আপনিই সিদ্ধান্ত নেবেন কাকে আপনার সার্ভিস প্রোভাইড করবেন আর কাকে না। ধরা যাক, আপনি কোন একটা শহরে একটা দোকান দিয়েছেন। ব্যবসা বেশ ভালই চলছে, কিন্তু আপনার শহরে হঠাৎ কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে হয়তো বেশ কিছুদিনের জন্য আপনার ব্যবসায় মন্দা শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা শুধু আপনার শহরকেন্দ্রিক নয়, তাই ঝুঁকিও কমযেমনআমার একজন ক্লায়েন্ট নিউ জার্সিতে থাকেনকিছুদিন আগে হ্যারিকেন স্যান্ডিতে তাঁর এলাকা তছনছ হয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় তাঁর কাজও হুট করে কিছুদিনের জন্য স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমার অন্যান্য শহরের বা অন্যান্য দেশের ক্লায়েন্টদের কাজ ঠিকই চলেছে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মানে এই নয় যে আপনাকে সারাজীবন একা একাই কাজ করতে হবে। আমি নিজেও একা কাজ করি না। আমাদেরও অফিস আছে। তবে সেটাও ভার্চুয়াল অফিসক্রিয়েটিভ এলিয়েন্সের কে কোথায় বসে কাজ করলো সেটা নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যাথা নেইকাজ ঠিকঠাক হলেই হলো। আমাদের প্রতিষ্ঠানের হয়ে বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন এবং চেক প্রজাতন্ত্রের ১৪ জন ছেলেমেয়ে যার সুবিধামত জায়গায় বসে নিয়মিত কাজ করছে এটা ভাবতেও ভাল লাগে। আমরা চাই যে জায়গাটিতে বসে আমাদের এমপ্লয়িরা যেখানে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারেন, যেভাবে এবং যে পোষাকে ক্রিয়েটিভিটি দেখাতে সেভাবে বসেই কাজ করুক। মুদি দোকান থেকে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, চাকুরিতে কোথাও এটা কল্পনাও করা যায় না।

৪. আপনি কতটা আয় করতে চান? কথাটা আপাতদৃষ্টিতে হাস্যকর মনে হবে। যেখানে দেশে সর্বোচ্চ শিক্ষাস্তর শেষ করার পরও কয়েক লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হয় একটা চাকরীর আশায়, তারপরও চাকরীটা হবে কিনা এটার নিশ্চয়তা আপনাকে কেউ দিতে পারে না। সেখানে উল্টো কেউ যদি আপনাকে জিজ্ঞাসা করে কোন ঘুষ ছাড়াই নিজের যোগ্যতায় আপনি প্রতি মাসে কি পরিমাণ আয় করতে চান! তাহলে হাসি আসতেই পারে। কিন্তু কথাটা মোটেও হাসির নয়। আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতার উপরেই নির্ভর করবে আপনি কতটা আয় করবেনআর আপনি যখন আন্তর্জাতিক বাজারে কাজ করবেন, স্বাভাবিকভাবেই আপনার কাজের দাম স্থানীয় বাজারের চাইতে কয়েকগুণ বেশি হবে।

 

লক্ষ্য নির্ধারণঃ যেকোনো কিছু করার আগে অবশ্যই অনেক কিছু ভেবে নিয়ে কাজ করতে হয়। সেরূপ এখানেও আপনাকে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে কি বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করবেন। বহুল কোনো কাজ শিখে আপনি ফ্রিল্যান্সিং-এ ভালো কিছু করতে পারবেন না। সেজন্য এমন একটি বিষয় নির্ধারণ করুন যেটা আপনার জন্য শিখতে অল্প সময় লাগবে এবং আপনি যে বিষয়টা ধরে রাখতে পারবেন।

কোথায় থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন? অনেকেই আছেন যারা কিছু না জেনেই মার্কেটপ্লেসে নেমে পরেন। তারপরে কোনো রেজাল্ট না পাওয়ার পরে হতাশ হয়ে পরেন এবং কাজ করা বাদ দিয়ে দেন। আসলে যদি কোনো কাজ করতে জানা না থাকলে সেই কাজ থেকে ভালো কোনো কিছু আশা করা যায় না। সে জন্য আমাদের কোনো কিছু করার আগে ভেবে নিতে হবে কোন কাজটি আমার জন্য ঠিক হবে। লক্ষ্য বস্তু ঠিক করে নেওয়ার পরে ঠিক করতে হবে আপনি কোথায় থেকে কাজটি ভালো ভাবে শিখতে পারবেন।

বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠানই ফ্রিল্যান্সিং এর প্রশিক্ষন দিয়ে আসছে। এর মধ্যে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা কোনো রকমে কাজ শিখিয়ে দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানই আছে তারা অনেক যত্ন সহকারে ১০০% নিশ্চয়তা সহকারে বিভিন্ন ধরণের কাজ-কর্ম শিখাচ্ছে। তার মধ্যে ALL IT BD প্রতিষ্ঠান অনেক জনপ্রিয়।

 

সময় নির্ধারণঃ সব কাজের ক্ষেত্রেই সময় নির্ধারণ করতে হয়। কিন্তু অনলাইনে যতো কাজ আছে সেগুলোতে অনেক বুঝে শুনে সময় ব্যয় করতে হবে। আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজের কতোটুকু সময় দিয়েছেন সে সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে কাজ করুন। প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের সময়ানুবর্তিতা মেনে চলা উচিৎ।

দায়িত্বশীলতাঃ সকল মানুষের মধ্যেই দায়িত্ব জ্ঞান থাকা উচিৎ। আর ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আপনাকে আরো দায়িত্ববান হতে হবে। আপনার ক্লায়েন্ট যেভাবে আপনাকে কাজ দিবে ঠিক সে ভাবেই দায়িত্ব সহকারে কাজ করে দিতে হবে।

 

কোথায় কাজ পাবেন?

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য মার্কেটপ্লেসঃ বর্তমানে অনেক ফ্রিল্যান্সারই অনেক মার্কেটপ্লেসে কাজ করে যাচ্ছেন। তার মধ্যে সমচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস গুলো নিচে দেওয়া হলোঃ

আপওয়ার্কঃ(Upwork)

এখানে আপনি আপনার মতো করে বিভিন্ন কাজের বিড করতে পারবেন। বর্তমান যুগের ফ্রিল্যান্সারদের অনেক জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত মার্কেটপ্লেস এটা। এখানে ঘন্টাপ্রতি এবং ফিক্সড প্রাইসদুধরণের কাজ পাওয়া যায়। কাজের পেমেন্ট নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ঘন্টাপ্রতি কাজ করলে। আর ফিক্সড প্রাইসে অর্থপ্রাপ্তি নির্ভর করে আপনার নিয়োগকারীর উপরনতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সবাই ঘন্টাপ্রতি কাজ রেকমেন্ড করেন

ফাইভারঃ(Riverr)

ফাইভার আসলে ছোট ছোট কাজের জন্য অন্যতম একটি মার্কেটপ্লেস। কিন্তু এখানে কাজ করতে চাইলে অনেক দক্ষতার প্রয়োজন।

ফ্রিল্যান্সার ডট কমঃ(Freelancer)

বর্তমান সময়ে অনলাইনে কাজ করার জন্য যতো মার্কেটপ্লেস আছে তার মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হলো ফ্রিল্যান্সার ডট কম। এখানে আপনি আপনার পছন্দ মতো যেকোনো ধরণের কাজ করতে পারেন। অনলাইনের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.Com)। প্রতিষ্ঠানটি একদম শুরু থেকেই নানারকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে, আরপ্রতিযোগিতার কারণেই হয়ত প্রতিষ্ঠানটির নাম শুনে থাকবেন আপনারা। এদের বিভিন্ন মেম্বারশীপ সিস্টেম আছে যেটার মাধ্যমে আপনি টাকা খরচ করে বাড়তি সুবিধা ভোগ করতে পারেন

গুরুঃ (Guru)

আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উপরের তিনটা কোম্পানি ই বেশি জনপ্রিয়। এদিক থেকে গুরু ডট কম (guru.com) খুব একটা জনপ্রিয় নয়। তবে যেহেতু এখানে লোকজনও কম, সুতরাং নতুনরা চাইলে এখানে একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন! তবে নতুন করে এটাতে ঘন্টাপ্রতি কাজের সিস্টেম চালু করা হয়েছে যেখানে পেমেন্ট নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। এছাড়াও আরো আছে, জুমলা ল্যান্সার এবং ফ্রিল্যান্সার সুইচ ইত্যাদি সাইটেও মোটামুটি ভাল মানের কাজ পাওয়া যায়। 

পিপল পার আওয়ারঃ(People Per Hour)

পিপল পার আওয়ার মূলত ডুয়াল মার্কেটপ্লেস। এখানে আপনি ফাইবারআরের মতো সার্ভিস বিক্রি করতে পারবেন আবার ফ্রিল্যান্সারের মতো জবে বিড করতে পারবেন।

৯৯ ডিজাইন’সঃ(99designs)

  এখানে ডিজাইনের কাজগুলো সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। আপনি এখানে লোগো, ব্যবসায়িক কার্ড, ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, ইনফোগ্রাফিক, টি-শার্ট, কার্ড, আমন্ত্রণ, পণ্য প্যাকেজ, বই এবং পত্রিকা কভার ইত্যাদি টাইপের অসংখ্য কাজ পাবেন। মূলত এটা অনেক আলোচিত একটা মার্কেটপ্লেস।

টিস্প্রিং:(teespring) 

এই মার্কেটপ্লেসটি শুধু মাত্র টি-শার্ট ডিজাইনের জন্য। এখান থেকে আপনি টি-শার্ট ডিজাইন করে অনেক অর্থ আয় করতে পারেন।

ডিজাইন ক্রাউডঃ(design crowd)

 এই মার্কেটপ্লেসে যাবতীয় ডিজাইন বিক্রি করতে পারবেন। তাছাড়া ডিজাইন সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান এই সাইটটি করে থাকে।

টপটল ডট কমঃ (Toptal)

যদি আপনি একজন ভালো একটি ডেভলপার হয়ে থেকেন তাহলে এই মার্কেটপ্লেসটি আপনার জন্য। এখানে শুধু ডেভলপারদের জন্য কাজ দেওয়া থাকে।

ড্রিবলঃ(Dribble) 

আপনার যদি গ্রফিক্স ডিজাইনার, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকে তাহলে এই সাইটটি আপনার জন্য ভালো সহায়ক হতে পারে।

ওয়ার্ডপ্রেসঃ(Wordprees)

এই সাইটটি ওয়ার্ডপ্রেসের একটি অফিসিয়াল জব বোর্ড। এখানে আপনি থিম কাস্টমাইজেশন বা ওয়ার্ডপ্রেস সাইট অপ্টিমাইজেশনের কাজ পাবেন।

 

অ্যাকাউন্ট তৈরি:

যাইহোক মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে সবারই ধারণা এসে গেলো। কিন্তু শুধু মার্কেটপ্লেসের ধারনা থাকলে হবেনা। মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে চাইলে আপনার নিজের একটি একাউন্ট থাকতে হবে। আপনি যে মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে চান ওই মার্কেটপ্লেসের নিয়ম অনুসারে একটি একাউন্ট তৈরী করতে হবে। আর আপনার একাউন্ট অনেকটা চাকচিক্ক হতে হবে। কারণ আপনার একাউন্ট দেখেই ক্লায়েন্ট আপনার থেকে কাজ করে নিবে। মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে তো জানলেন। এবার আপনাকে এর মধ্য থেকে যেকোন একটি মার্কেটপ্লেস পছন্দ করতে হবে যেখানে আপনি কাজ শুরু করতে চান।

আগের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে সেগুলোকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতি মূহুর্তে নতুন কাজ আসছে। আপনার পারদর্শীতা আনুযায়ী প্রতিটা কাজ দেখতে থাকুন। প্রথম কয়েক দিন বিড করার কোন প্রয়োজন নেই। এই কয়েকদিন ওয়েবসাইটি ভাল করে দেখে নিন। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং সাহায্যকারী আর্টিকেল পড়তে পারেন। একটি কথা মনে রাখবেন, প্রথমদিকে কাজ পাওয়া কিন্তু সহজ নয়।

তাই আপনাকে ধৈর্যসহকারে বিড করে যেতে হবে। প্রথম কাজ পেতে হয়ত ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কয়েকটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। তখন ক্লায়েন্টরাই আপনাকে খুঁজে বের করবে।

ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন জরুরী (Become Skilled in English Language):

আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং সেক্টরের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ইংরেজি না জানা। গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশের তরুণেরা আউটসোর্সিংয়ে পিছিয়ে থাকার পেছনে ইংরেজি দুর্বলতা অনেকটা দায়ী। আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি অনেক বেশি গুরুত্ব¡পূর্ণ।  যেহেতু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয় সে জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। নতুবা কোনভাবেই আপনি আপনার বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট যেমন বুঝতে পারবেন না তেমনি কোন সমস্যাও তাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন না। ইংরেজিতে দূর্বলরা উপরের কথা পড়ে হয়ত ঘাবড়ে যেতে পারেন, তবে তাদের জন্য বলতে পারি, আপনাকে কিন্তু ইংরেজিতে পন্ডিত হতে হবে এমনটি নয়! ভাব বিনিময় এবং ব্যবসায়িক কাজগুলোর জন্য সাধারণত যে ইংরেজি ব্যবহৃত হয় সেটি জানলেই চলবে। যারা ইংরেজিতে দূর্বল তাদের এটি দূর করতে খুব বেশি যে সময় লাগবে এমনটি নয়, ২ থেকে ৩ মাস একটু চেষ্টা করলেই এ ধরণের ইংরেজি রপ্ত করা সম্ভব।

টাকা আনার উপায়:

মার্কেটপ্লেসে যোগ দিলেন, কাজ পেলেন এবং সেটি সম্পর্ন করে সাবমিটও করলেন। এবার আপনার আয় ঘরে আনবেন কিভাবে (Money Withdrawal Process)? ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো কি কি মেথড সাপোর্ট করে সেটা দেখার আগে আমাদের দেখতে হবে আমাদের দেশে বা আমাদের ব্যাংকগুলো কি কি পেমেন্ট মেথড সাপোর্ট করে। যেমন আপওয়ার্ক এর কথাই ধরি, এখানে মাস্টার কার্ড, পেপাল, স্ক্রিল বা মানিবুকার এবং ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। এদের মধ্যে পেপাল বাংলাদেশে এখনো চালু হয়নি। তাই বাকি তিনটির যেকোন একটির মাধ্যমেই আপনাকে অর্থ উত্তোলন করতে হবে।

১. স্ক্রিল বা মানিবুকারঃ 

স্ক্রিল (Scrill or Moneybookers) শুরু থেকেই নিরাপত্তার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর এবং সব দিক দিয়েই ঝামেলবিহীন অর্থ উত্তোলন মাধ্যম। এ মাধ্যম দিয়ে অর্থ উত্তোলন করার জন্য আপনাকে ংশৎরষষ.পড়স থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখবেন, নামের জায়গায় আপনার সার্টিফিকেট নাম ব্যবহার করবেন। কারণ পরে ভেরিফাই করতে হবে ব্যাংকে টাকা তোলার আগে।

কারেন্সি সিলেকশনের জায়গায় ইউএস ডলার ব্যবহার করবেন। অ্যাকাউন্ট তৈরি শেষে এবার ভেরিফাই করার পালা। স্ক্রিল থেকে ভেরিফিকেশন রিকোয়েস্ট পাঠানোর পরে আপনাকে মানিবুকার চিঠি পাঠাবে ঠিকানা ভেরিফাই করার জন্য। চিঠি আসতে ২৫ দিন থেকে একমাস এর মত সময় লাগে। চিঠিতে গোপন কোড লেখা থাকে, সেটি মানিবুকারের নির্দিষ্ট বে ইনপুট করলেই ঠিকানা ভেরিফাইড হয়ে যাবে। এবার ব্যাংক ভেরিফাই করতে হবে।  আপওয়ার্ক বা অন্য কোন ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে স্ক্রিল এ পেমেন্ট সেন্ড করার পরে তা স্ক্রিল থেকে ব্যাংক এ পাঠাতে হবে। আপনি স্ক্রিল এর প্রোফাইল অপশন এ গিয়ে ব্যাংক এর সুইফট কোড এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার সঠিকভাবে দিলেই ব্যাংকে জমা হয়ে যাবে। এবার কাজ হল স্ক্রিল থেকে অল্প কিছু পরিমাণ ডলার (১৫ ডলার এর নিচে) আপনার ব্যাংক এ পাঠান। প্রথম লেনদেনে টাকা ব্যাংক এ আসতে মাস খানেক সময় লাগতে পারে।

টাকা এলো কি না জানতে নিয়মিত ব্যাংকে খোঁজ রাখুন অথবা ইন্টারনেট এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যালেন্স জানতে পারেন। টাকা চলে আসলে ব্যাংক এ যোগাযোগ করে আপনার অ্যাকাউন্ট এর স্টেটমেন্ট নিয়ে আসুন। এটা অবশ্যই লাগবে। এর পর এটি স্ক্যান করে মানিবুকার এর নিকট পাঠাতে হবে। এটি পাঠানোর জন্য আপনি এই ইমেইল এড্রেস ইউজ করতে পারেন (রহভড়@সড়হবুনড়ড়শবৎং.পড়স) কিংবা স্ক্রিল এ লগইন করে কনট্যাক্ট থেকে তাদের মেইল পাঠাতে পারেন। ব্যাংক এর সকল ইনফরমেশন এবং নাম ঠিক থাকলে দুইদিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার স্ক্রিল ভেরিফায়েড হয়ে যাবে এবং আপনার উইথড্রয়াল লিমিট বেড়ে যাবে। এরপর থেকে আপনি কোন ঝামেলা ছাড়াই ব্যাংক এ টাকা তুলতে পারবেন। সময় লাগবে ১ থেকে ২ দিন!

২. মাস্টার কার্ড:

পেওনিয়ার (Payoneer) নামে একটি প্রতিষ্ঠান সব ফ্রিল্যান্সারদেরকে একটি করে মাস্টারকার্ড পাঠায় অর্থ লেনদেন করার জন্য। এ কার্ডটি পাওয়ার জন্য আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলবেন তা পেমেন্ট অপশন থেকে পেওনিয়ারের কাছে মাস্টারকার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেমন আপওয়ার্ক এর মাধ্যমে আবেদন করতে হলে এখানের ওয়ালেট বা পেমেন্ট অপশন এ গিয়ে মাস্টার কার্ডের জন্য সাইন-আপ করার লিংকে ক্লিক করলেই পেওনিয়ার ডটকম সাইটে নিয়ে যাবে। সেখানে নতুন ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি আপনার পূর্ণ নাম ঠিকানা ব্যবহার করবেন। এ সাইটে সাইন আপ করতে পাসপোর্ট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর সিরিয়াল নাম্বার দিতে হবে। কোন আবাসিক এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন ইউনিভার্সিটির ঠিকানা দেয়া যাবে না। সাইন-আপ ফরমে ঠিকানা লেখার সময় ৩০ অক্ষরের মধ্যে রাখতে হবে। সাধারণভাবে কার্ড হাতে পেতে এক মাস সময় লাগবে।

কার্ড হাতে পাওয়ার পর সেটি অ্যাক্টিভেট করতে হবে পেওনিয়ার ওয়েবসাইটে লগ-ইন করে। নিরাপত্তার জন্য পিনকোড দিতে হবে চার ডিজিটের। এরপর কার্ডটি ব্যবহার উপযোগি হয়ে যাবে। তবে আপনাকে আগেই জানিয়ে রাখি, পেওনিয়ার কার্ড দিয়ে টাকা তোলা অনেক খরচের ব্যাপার। যেখানে স্ক্রিল থেকে টাকা তুলতে গেলে আপনার সবমিলিয়ে সাড়ে তিন ডলার খরচ হবে সেখানে পেওনিয়ারে খরচ প্রায় দ্বিগুণ। পেওনিয়ার এ ২০ ডলারের কম উইথড্রয়াল সাপোর্ট করে না। তাই আপওয়ার্ক বা অন্য সাইট থেকে উইথড্র করবেন ২০ ডলার বা তার বেশি। উইথড্র করলেই সাথে সাথে কার্ড এ ডলার আসবে না। এটা অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকবে দুদিন। এখানে বলা হবে যে আপনি যদি এখনই টাকা নিতে চান তাহলে আপনাকে আড়াই ডলার খরচ করতে হবে। আর যদি তা খরচ করতে না চান তাহলে দুইদিন অপেক্ষা করতে হবে। এখন আপনি যদি আড়াই ডলার খরচ করতে পারেন তাহলে তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যে আপনার কার্ড এ ডলার চলে আসবে। আর তা না হলে অপেক্ষা করতেই হচ্ছে!

কার্ডে টাকা জমা হওয়ার পর এবার নিজ হাতে টাকা আনার পালা। এটি যেহেতু মাস্টার কার্ড, তাই দেশের যেকোন ব্যাংকের মাস্টারকার্ড সাপোর্টেড এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যাবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক সহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক মাস্টার কার্ড সাপোর্ট করে।

৩. সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফার (Bank Transfer): 

ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে টাকা পাওয়ার জন্য এটি বেশ ঝামেলাবিহীন উপায়। প্রায় সব ফ্রিল্যান্সিং সাইটই সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। আপওয়ার্ক থেকে টাকা আসতে মাত্র চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ব্যাংকিং আওয়ার সময় লাগে। ওয়্যার সিস্টেম যোগ করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের উইথড্রয়াল মেথড থেকে ওয়্যার ট্রান্সফার সিলেক্ট করে সেখানে ব্যাংকের পরিপূর্ণ তথ্যাদি বসাতে হবে। এখানে প্রয়োজন হবে ব্যাংকের সুইফট কোড, সম্পূর্ণ অ্যাকাউন্ট নাম্বার, ব্যাংকের শাখার পূর্ণ ঠিকানা। এক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনার নাম ও ব্যাংকে আপনার নাম একই হতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার প্রথম ট্রানজেকশন পাঠালে টাকা ব্যাংক এ আসলেই ব্যাংক ভেরিফাই হয়ে যাবে।

যেসব কাজ করবেন

♦ ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, বিস্তারিত: https://allitbd.com/web-design-development
♦ গ্রাফিক্স ডিজাইন, বিস্তারিত: https://allitbd.com/graphics-design
♦ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), বিস্তারিত: https://allitbd.com/seo
♦ অ্যাডমিন সাপোর্ট, বিস্তারিত: https://allitbd.com/admin-support
♦ মাস্টারিং গ্রাফিক্স ডিজাইন, বিস্তারিত: https://allitbd.com/mastering-graphic
♦ থ্রিডি মডেল ডিজাইন (ব্লেন্ডার), বিস্তারিত: https://allitbd.com/3d-model-design
♦ ডিজিটাল মার্কেটিং, বিস্তারিত: https://allitbd.com/digital-marketing
♦ সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, বিস্তারিত: https://allitbd.com/social-media-marketing
♦ অ্যাডভান্সড ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট, বিস্তারিত: https://allitbd.com/wordpress-development
♦ কমপ্লিট সিপিএ মার্কেটিং, বিস্তারিত: https://allitbd.com/cpa-marketing
♦ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিস্তারিত: https://allitbd.com/affiliate-marketing
♦ অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, বিস্তারিত: https://allitbd.com/apps-development
♦ অটোক্যাড (2D & 3D) , বিস্তারিত: https://allitbd.com/autocad-2d-3d
♦ থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স এন্ড অ্যানিমেশন, বিস্তারিত: https://allitbd.com/3d-studio-max
♦ ইউটিউব মার্কেটিং এন্ড অ্যাডসেন্স, বিস্তারিত: https://allitbd.com/youtube-marketing
♦ প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং, বিস্তারিত: https://allitbd.com/video-editing

কাজ শিখবেন কিভাবে?

আপনি যদি প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার (Freelance Career) গড়তে চান, তাহলে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। কিন্তু, বেশিরভাগ মানুষ কোনকিছু চিন্তা না করেই প্রশিক্ষণের দিকে ছুটে। যার ফলে, হয় অপ্রয়োজনীয় দক্ষতার উপর প্রশিক্ষণ নেয় বা একাধিকবার প্রশিক্ষণ নিতে হয়, নতুবা কিছু না শিখেই শুধু সার্টিফিকেট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। বেশিরভাগ মানুষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, পয়সার লোভে। কিন্তু পয়সার লোভ নিয়ে আগালে, বেশিদূর যাওয়া যায় না। পয়সার সাথে আরেকটি জিনিষের দরকার পড়ে, আর তাহলো- দক্ষতা।  দক্ষতা নিয়ে পয়সা কামানোর জন্য পেশায় প্রবেশ করতে চাইলে, আপনাকে সঠিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। আর প্রশিক্ষণ নেবার আগে আপনাকে আপনার ক্যারিয়ার এর পথ ঠিক করতে হবে। আপনার যদি ইন্টারনেটে সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে তাহলে কোন ট্রেনিং সেন্টার ছাড়াও আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমেও অনক কিছু শিখতে পারবেন।

অ্যাপ্লিকেশন বা কাজে বিড করার আগে যে ১০ টি জিনিস জানতে হবেঃ

১. বিড করার আগে দেখে নিন বাইয়ারের রেটিং আর পেমেন্ট মেথড (Buyer Rating & Payment Method)। বায়ারের রেটিং ভালো না হলে কিংবা তাঁর পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড না হলে উক্ত কাজে অ্যাপ্লিকেশন করা ঠিক হবেনা।

২. খুব বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হয় এমন কোন কাজে নতুনরা অ্যাপ্লিকেশন করবেন না। তাছাড়া আপনার চেয়ে খুব দক্ষ ফ্রিল্যান্সাররা যেখানে প্রতিযোগিতা করছে সেখানে না যাওয়াই ভাল, সেখানে অপ্রয়োজনে আপনার সময়ের অপচয় হবে।

৩. দেখে নিন কতজনকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে। ৪ থেকে ৫ জনকে ইতিমধ্যে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়ে গেলে সেই কাজটি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

৪. করতে পারবেন না এমন কোন কাজে কোনভাবেই অ্যাপ্লিকেশন করতে যাবেন না। এতে আপনার সময় যেমন নষ্ট হবে তেমনি নিজের উপর আস্থাও কমে আসবে, হতাশ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

৫. অ্যাপ্লিকেশন (Before Applying the Job) করার আগে অবশ্যই আপনার প্রোফাইলটাকে ভাল করে সাজাতে হবে, এটি এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যাতে বায়াররা আপনার প্রোফাইল দেখে ধারণা করতে পারে আপনি একজন প্রফেশনাল এবং দক্ষ কর্মী। প্রোফাইলে অবশ্যই আগে করা কাজের পোর্টফোলিও থাকতে হবে।

৬. কাজ পাওয়ার জন্য কভারলেটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা লেখার সময় তাই আপনাকে সচেতনভাবে লিখতে হবে। কাজের বর্ণনার সাথে মিল রেখে অ্যাপ্লিকেশন বা কাভারলেটারটি লিখবেন। তাঁকে এই কাভার লেটারটির মাধ্যমে বোঝাতে হবে আপনি এই কাজটি পারবেন, কিভাবে করবেন, কত সময় লাগবে এবং কিভাবে তাঁর কাছে রিপোর্টিং করবেন। সবচেয়ে ভালো হয় অ্যাপ্লিকেশনের সাথে আপনার একই ধরণের কাজের ফাইল যুক্ত করে দিতে পারলে।

৭. বাংলাদেশি নতুন ফ্রিল্যান্সাররা একটা ভুল করেন। তাঁরা কাজ পাওয়ার জন্য বায়ারকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। বোঝাতে চান এই কাজ ছাড়া তিনি খুব বিপদে আছেন, তার পরিবার অর্থকষ্টে ভুগছে। সুতরাং এই কাজটি তার খুবই দরকার। সাবধান, এই কাজটি কোনভাবেই করতে যাবেন না। আপনি আপনার দক্ষতাকেই বায়ারের কাছে বড় করে দেখাবেন।

৮. কভারলেটারের এ অহেতুক কথা লিখে বড় করবেন না। এতে বায়াররা কাভার লেটারকে টেমপ্লেট টাইপের লেখা ভাবতে পারে, না পড়ার সম্ভাবনাই অনেক বেশি।

৯. প্রাথমিক ভাবে সহজ কাজে অ্যাপ্লিকেশন করুন তবে প্রজেক্টের মূল্য বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি কমানোর চেষ্টা করবেন না। কম মূল্য দিলে বায়ার কর্তৃক কাজ দেয়ার সম্ভাবনা বেশি এটি কোনভাবেই ভাববেন না। বরং এতে আপনার স¤পর্কে বায়ার নেতিবাচক ধারণা পোষণ করবে।

১০. আর হ্যা, যত পারুন অনলাইনে থাকার চেষ্টা করুন। নতুন কোন প্রজেক্ট সাইটে প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাপ্লিকেশন করার চেষ্টা করুন। তবে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কভারলেটার কৌশল:

ভাল কাভার লেটার (Cover Letter Writing) বলতে বোঝানো হচ্ছে এমন কাভার লেটার যেটি প্রথম দেখাতেই একজন বায়ারের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। এধরণের কাভার লেটার লেখার আগে আপনাকে মনে রাখতে হবে, সেটি অবশ্যই সংক্ষিপ্ত করবেন। প্রথমে বায়ারকে বোঝাতে হবে আপনি কাজটা বোঝেন, তারপর অল্প কথায় বলতে হবে: এই কাজ কোনো ব্যাপার না, আমি আগেও করেছি, এই দেখ [লিংক] বা স্যাম্পল (এটাচ করা ফাইলে)। শুধু এই লাইনটাই, ইংরেজিতে সবচেয়ে ভাল কভার লেটার।

অনেকেই বলতে পারেন এত ছোট আবার কাভার লেটার হয় নাকি? হয়, কেন হবেনা? আমি যদি দুই লাইনেই তাঁকে সবকিছু বোঝাতে পারি কি দরকার আমার অনেক বড় কভারলেটার লেখার? বড় বা লম্বা কভার লেটারের কোন মানে নেই যদি বায়ার সেটি না পড়ে। একবার বায়ারের আসনে নিজেকে বসান, বা নিজেই বায়ার হয়ে যান আপনার কিছু প্রোজেক্টের সাহায্যের জন্য। দেখেন কাদের কভার লেটার পছন্দ হয়েছে, কাদের হয় নাই। ওখান থেকেই বুঝতে পারবেন আসলে কী করা উচিত, কি করা উচিৎ নয়।

লম্বা কভার লেটার দিলে ক্লায়েন্ট পড়তে চায় না। আপনি পড়বেন? আপনি যা চাইছেন, তা না দিয়ে যদি কেউ ইতিহাস বর্ণনা শুরু করে, তাহলে আপনি তাকে পছন্দ করবেন না এটাই স্বাভাবিক। উল্টো ভাববেন যে, আপনি যে কাজের জন্য পোস্ট দিয়েছেন তার কিছুই সে পড়ে নি। সাধারণত: ৫ সেকেন্ডের ভিতরে আপনাকে বায়ারের মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে, তারপর অন্য কিছু পড়তে আগ্রহ পাবে। তাই প্রথম ২ লাইনেই আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।

কিভাবে প্রথম কাজ পাওয়া যায়? (Ways To Get First Online Work or Job):

একটি প্রশ্ন আমাদের খুব বেশি শুনতে হয়, আমি এত এত কাজে অ্যাপ্লিকেশন করি কিন্তু কাজ তো পাই না! কি করতে পারি? উত্তর পরে বলছি। তার আগে একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া দরকার।

আপনার প্রোফাইল কি পরিপূর্ণ? আপনার কি উক্ত কাজে দক্ষতা আছে? আপনি কি আপনার কাজের স্যা¤পল যুক্ত করেছেন? আপনি কি ভালমানের কভারলেটার লিখেছিলেন অ্যাপ্লিকেশনের সময়?

উত্তর যদি না হয়, তবে বলবো কেন আপনাকে একজন বায়ার কাজ দিবে? কোন কাজে অ্যাপ্লিকেশন করার আগে উক্ত বিষয়গুলো অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। প্রোফাইল সাজানোর জন্য আপনি যে বিষয়ে কাজ করেন সেই বিষয়ের ভাল মানের ফ্রিল্যান্সারদের প্রোফাইল দেখুন, সেখান থেকে ধারণা নিন। এরপর আপনার প্রোফাইলকে তাঁদের মত করে সাজান।

এক্সপার্ট হউন

নিজেকে অবশ্যই বিশেষায়িত করতে হবে (Become an Expert or Skilled Professional Online)!: আপনাকে একজন বিশেষায়িত প্রফেশনাল হতে হবে। আপনি যে কাজ করতে চান কেবল সে অনুযায়ীই আপনার প্রোফাইলকে সাজাতে হবে। কোনভাবেই আপনার প্রোফাইলে অনেকগুলো বিষয় হাইলাইট করা যাবেনা। যেমন: আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করেন, আবার প্রোফাইলে বিজনেস প্ল্যান রাইটিংও দিয়ে রেখেছন।

দুটি স¤পূর্ণ ভিন্ন জিনিস, বায়াররা তাই আপনার প্রোফাইল দেখে কনফিউজ হয়ে যাবে, আপনি আসলে কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ সেটি বুঝতে পারবে না। আর কনফিশউন নিয়ে কেউ আপনাকে কাজ দিবেনা সেটি নিশ্চত থাকতে পারেন! আর আপনি যে ক্যাটেগরির কাজ করেন পোর্টফোলিওতে কেবল ঐ ক্যাটেগরির কাজগুলোকেই দিতে হবে। আপনি যে কাজটি ভালো পারেন এটি বায়ারকে বোঝাতে প্রচুর স্ক্রিল টেস্ট এক্সাম দেয়ার কোন বিকল্প নেই।

প্রোফাইল সাজানোর পর কাজে অ্যাপ্লিকেশন করার সময়ও অনেক সতর্ক থাকতে হবে। ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ফ্রিল্যান্সারই কাজের বিস্তারিত না পড়ে সেখানে অ্যাপ্লিকেশন করে। আর বায়ার কাভার লেটার একনজর দেখেই তাঁদের অ্যাপ্লিকেশন রিজেক্ট করে দেয়। আপনি এবার চিন্তা করুন, ঐ ৬০ কিংবা ৭০ শতাংশের মধ্যে আপনি একজন না তো?

একই কাভার লেটার বার বার লেখার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কাস্টোমাইজ কভারলেটার লিখতে হবে প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য। বায়ারের সমস্যা বুঝে সেটা নিয়ে কথা বলবেন কভারলেটারে। কিভাবে সেটির সহজ সমাধান হতে পারে সেটিও ফোকাস করবেন। মনে রাখবেন বায়ার তাঁর সমস্যা সমাধানের জন্যই এখানে এসেছে।

কোন কাজে ইন্টারভিউতে ডাক পড়লে প্রথমে তাঁকে ধন্যবাদ দিতে পারেন ইন্টারভিউতে ডাকার জন্য। কোনভাবেই ভাববেন না ইন্টারভিউতে আপনার ডাক পড়েছে মানে আপনি নিশ্চিত ঐ প্রজেক্টটি পেয়ে গেছেন। ইন্টারভিউয়ের সময় মাইক্রোফোন ঠিক রাখবেন আর নিরব স্থানে বসে কাজ করতে পারলে ভাল হয়।

প্রচলিত ভুল ধারণা:

দ্রুতগতিতে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ে (Freelance Outsourcing) এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর এই এগিয়ে যাওয়ার বিপরীতে ফ্রিল্যন্সিং নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে। ভালোভাবে না জেনে অন্যকে উপদেশ দেওয়ার কারণেই এমনটি ঘটছে। এই ভুলগুলো সম্পর্কে জানা ও সচেতন থাকা ভাল।

ইনভেস্ট করে আয় করাঃ 

হ্যাঁ, ইনভেস্ট করলেই আয় করা যায় এমন একটি ভুল ধারণা সর্বত্র রয়েছে এখনও। অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে ইনভেস্ট করে সর্বশাš‭ হওয়া খুব সোজা। পিটিসিতে, হাইপে, এমএলএম-এ ইনভেস্ট করলে আপনি যে ধরা খাবেন এটি অনেকটাই নিশ্চিত থাকতে পারেন। বাংলাদেশে অনেকে ইতিমধ্যে তাদের ইনভেস্টকৃত মূলধনও হারিয়েছে। সুতরাং যেখানে সেখানে ইনভেস্ট করলেই যে আপনি আয় করতে পারবেন এমনটি কখনোই ভাববেন না।

রেফারেলের মাধ্যমে আয়ঃ

আমাদের অনেকেরই একটা বদ অভ্যাস আছে। যাচাই বাছাই না করেই বলে, আমি শুনেছি আমার এক বন্ধুর মামার চাচার দুঃসম্পর্কের এক ফুফাতো ভাইয়ের ছোট ভাই একটা সাইট থেকে ১ ডলার আয় করে, আগামী মাসের ১৫ তারিখে পেআউট করবে অ্যালার্টপে-তে! কোনভাবে তার কাছ থেকে সাইটের অ্যাড্রেস নিয়ে সাইন আপ করি এবং বড় বড় কমিউনিটি সাইটগুলোতে রেফারেল লিঙ্কসহ পোস্ট দেই, স্প্যাম কমেন্ট দেই! এই ধরণের কাজগুলো একেবারেই বোকামি। রেফারেলের মাধ্যমে আয় করার জন্য গুজবে কান দিয়ে স্প্যামিং করে কোন লাভ নেই।

খুব সহজে বিনা পরিশ্রমে ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায়ঃ

এটা সবচেয়ে বড় ভুল ধারনা। আপনি আশা করছেন একজন চাকুরিজীবি কিংবা ব্যবসায়ীর চেয়ে বেশি আয় করবেন অথচ পরিশ্রম করবেন না! এটি কি কোনভাবেই হতে পারে? ইন্টারনেটে যে পদ্ধতিতেই আয় কর
ন না কেন, আপনাকে যথেষ্ট সময় ও মেধা ব্যায় করতে হবে।

পিটিসি সহজে আয়ের কার্যকর পদ্ধতিঃ

পিটিসি হ‪েছ কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক করবেন আর আপনার নামে টাকা জমা হবে। বিষয়টি পুরোপুরি প্রতারণা ছাড়া কিছুই না। সাবধান, টাকা আয়ের জন্য পিটিসি সাইটে জয়েন করেছেন তো মূলধনই গায়েব হয়ে যাবে!

পেপ্যাল না থাকলে আয় করা যাবে নাঃ

পেপ্যাল না থাকায় বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটে আয় করার কোন পথ নেই। এমনটি মনে করেন অনেকে। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। পেপ্যাল ছাড়াও অনেক উপায়ে বাংলাদেশে টাকা আনা যায়।

পরিশেষে:

আমাদের দেশে এখনো অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা ঘন্টায় ২০-৩০ ডলার আয় করছেন। আসুন আমরাও চেষ্টা করি। চেষ্টা করলে অনেক কিছুই সম্ভব। তাই আর বসে না থেকে আপনিও হয়ে উঠুন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার।

ফ্রিল্যান্সিং কাজে মরিয়া মনোভাব প্রয়োজন। আমাকে একাজ করতেই হবে, আমি অবশ্যই করব, আমি পারব, এভাবে চেষ্টা না করে সফল হওয়া যায় না। সবসময় এধরনের মরিয়া মনোভাব ভাল ফল দেয় এমন কথা নেই। বরং কোন কোন সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সঠিক মনোভাব নিয়ে কাজ চালিয়ে যান একদিন আপনি অবশ্যই সফল হবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

Facebook Comments

Leave a Reply