0
  Login
ফ্রিল্যান্সার হতে চান?..যেভাবে শুরু করবেন…

ফ্রিল্যান্সার হতে চান?..যেভাবে শুরু করবেন…

বিসমিল্লাহীর রহমানির রাহীম ফ্রিল্যান্সার হতে চায় অনেকেই। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনার ও ধৈর্য্যর অভাবে অনেকেই হাল ছেড়ে দেন। আর জড়িয়ে পড়েন হতাশার জীবনে। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, কেউ হারবে আর কেউ জিতবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে জিতল সে কেন জিতল এবং যে হারলো সে কেন হারলো এটা যদি খুঁজে বের করে সঠিক পন্থায় এগিয়ে যাওয়া যায় তাহলে কিন্তু অবশ্যই আপনার বিজয়ী হওয়ার সম্ভবনা 99.99% ইনশাআল্লাহ। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মাসের পর মাস সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকারের কোর্স / কাজ করে থাকেন। কিন্তু অবশেষে বিড করতে করতে যখন বিরক্ত হয়ে যায় তখন আর হাল ধরে রাখতে না পেরে হাল ছেড়ে দেন। এটা কিন্তু মোটেই ঠিক না।

ভালমানোর বা সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু তথ্যাবলী শেয়ার করলাম। আপনি যদি এর চেয়েও ভালো কিছু জেনে থাকেন তাহলে শেয়ার করতে ভূলবেন যেন।

ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সার আমি আমার অভিজ্ঞতা ও ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে শর্টকাটে বলছি…. ধরেন আপনি ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইন জানেন। বাংলাদেশে যদি আপনি একটি লোগো তৈরি করেন তাহেল আপনি পারিশ্রমিক পান ১০০টাকার মত। কিন্তু এই লোগোটিই যদি ইউরোপের দেশে তৈরি করা হত তাহলে এটির দাম পড়ত কম হলেও 200-250টাকার মত। এখন যদি আপনি বাংলাদেশে থেকে ইউরোপের দেশগুলোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোগো তৈরি করে দেন তাহলে তাহলে ভাবুন তো আপনি কত টাকা বেশী ইনকাম করতে পারলেন? অথচ কাজ কিন্তু একই। আর আপনার মোট আয়ের 10% এর মত কেটে নিবে যারা আপনাকে এবং আপনার বায়ার কে সংযুক্ত করল। অর্থাৎ যেই ওয়েবসাইট থেকে আপনি কাজটি সম্পর্কে জানতে পারলেন এবং কাজটি সম্পন্ন করলেন। আর এসকল ওয়েব সাইটের মধ্যে ওডেক্স হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি সাইট।

ফ্রিল্যান্সার হতে চান?..যেভাবে শুরু করবেন…

ধাপ-১ : আপনাকে অবশ্যই কোন না কোন ভালো মানের কাজ শিখতে হবে। এই যেমন ধরেন প্রাথমিকভাবে অবশ্যই মাইক্রোসফট ওয়াড-এক্সেল এবং ইন্টারনেটের উপর ভালো জ্ঞান অর্জন করতে হবে। অবশ্য ইংরেজি ভাষাটাকেও একটু সমৃদ্ধ করতে হবে। তবে ভয় পাবেন না যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে কোন ইংরেজী ওয়ার্ড বা বাক্যের বাংলা অনুবাদ না করতে পারেন তাহেল আপনি গুগল ট্রেন্সলেটর ইউজ করতে পারেন। এরপর আপনি  এস.ই.ও , এর কাজ শিখেই শুরুকরতে পারেন।

ধাপ-২ : এসইও এর কাজ শিখে গেলে আপনি ব্যাকলিংক বিল্ডিং এর কাজ করতে পারেন। তবে প্রথমেই বড় কাজে হাত দিবেন না। যেই কাজটি আপনি সহজেই করতে সক্ষম ঐ কাজটিতে বিড করবেন। সেক্ষেত্রে কম আয়ের ছোট ছোট কাজের জন্য বিড করতে পারেন। কি বিড কি জিনিস বুঝতে পারছেন না? “বিড” শব্দটির অর্থ “প্রস্তাব দেওয়া” বা “আবেদন করা”। ওডেক্সে অনেক বায়াররা তাদের বিভিন্ন রকমের কাজের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। এই যেমন ধরেন একজন বায়ারের একটি স্কুল আছে। ঐ বায়ার তার স্কুলটির জন্য একটি লোগো তৈরী করাতে চাচ্ছেন। এখন তিনি তার লোগোর বিবরণ দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। এখন আপনি যদি ভালো লোগো ডিজাইন করতে পারেন তাহেল ঐ কাজটিতে আপনি আবেদন করবেন অর্থাৎ বিড করবেন।

ধাপ-৩ : এখন আপনি আস্তে আস্তে ব্যাকলিংকের কাজে বিড করে যান যদি কাজ পান তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং খুবই যত্নসহকারে কাজটি শেষ করুন। আর যদি কাজ না পান তাহলে মন ভাংঙ্গবেন না। চালিয়ে যান বিড করা আর সেই সাথে ছোট ছোট কাজ করে আপনি অল্পকিছু আয় করতে পারেন মাইক্রোওয়ার্কাস.কম থেকে। এখানে আপনাকে কাজের বিড করতে হবে না। তবে ইনকাম খুবই কম হবে। তাই বলে হাল ছেড়ে দিবেন না। কারণ এই ছোট ছোট কাজ গুলো করেই আপনি নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিকে বড় করতে থাকবেন যা আপনাকে পরবর্তীতে বড় বড় কাজ পেতে ও কাজ গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে।  লিংকে গিয়ে মাইক্রোওয়ার্কস এ একাউন্ট খুলুন এবং All Jobs ট্যাবে যান। পছন্দ অনুযায়ী কাজ বেছে নিন যা আপনার জন্য সহজ হবে তাই শুধু বেছে নিবেন। বেশী টাকার লোভে পড়ে যা পারবেন না তা নিয়ে এগুতে যাবেন না।

ধাপ-: আমি বার বার বলছি ছোট ছোট কাজ করুন ছোট ছোট আয় করুন। কাজ শেষে আপনি যখন দেখবেন আপনার একাউন্টে ডলার জমছে তখন অনেক মজা পাবেন। আর ছোট ছোট কাজ বলতে মাইক্রোওয়ার্কাস এ আপনি বিভিন্ন ফেসবুক লাইক-কমেন্ট-শেয়ার, ইউটিউব সাবসক্রাইব, বিভিন্ন সাইটে সাইন আপ করার কাজ পাবেন। তবে মনে রাখবেন ওডেক্স এবং মাইক্রোওয়ার্কাস এ যে ইমেই আইডি দিয়ে রেজি: করবেন তা আর অন্য কোন সাইটে সাইন আপে ব্যবহার করবেন না। বিভিন্ন সাইটে সাইন আপ করতে হলে নতুন কয়েক টি ইমেইল আইডি তৈরি করে নিন।

ধাপ-৫ : এই ভাবে ওডেক্সে বিড এবং মাইক্রোওয়ার্কাস এ নিয়মিত কাজ চালিয়ে যেতে থাকুন এবং আরোও বিভিন্ন কাজ যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখতে থাকুন। আর নিজের ক্যারিয়ারে করুন সমৃদ্ধ।

ধাপ-৬ : মোটামুটি ভাবে কাজ শিখা হলে স্থানীয় যেমন আপনার বন্ধু-স্বজনদের ওয়েবডিজাইন এর কাজের প্রয়োজন পড়লে তাদেরকে কাজ করে দিন এতে আপনার কিছু অর্থ উপার্জন হল এবং অভিজ্ঞতাও অর্জন হলো।

ধাপ-৭ : এখন আপনি আস্তে আস্তে ওডেক্সে ওয়েব ডিজাইন এবং গ্রফিক্স ডিজাইনসহ আরোও যেসকল কাজ শিখেছেন ঐ গুলোতে বিড করতে থাকুন। মনে রাখবেন বিড করার সময় যে সকল ফিল্ড পূরণ করতে হয় তাতে যেন আপনার মেধা-আন্তরিকতা, কাজকরার  ও যথা সময়ে ডেলিভারী দেওয়ার ক্ষমতা প্রকাশ পায়। প্রয়োজনে প্রথম কাজটির মূল্য একদম কমিয়ে দিয়ে বিড করুন। প্রথম কাজে না হয় আপনার পারিশ্রমিক একটু কমই পেলেন। কিন্তু কাজ যদি সঠিক ভাবে ডেলিভারী দিতে পারেন তাহেল কিন্তু আপনার জন্য এই হবে প্লাস পয়েন্ট।

ধাপ-৮ : ধরেন আপনি কাজ পাচ্ছেন না। তাই বলে কিন্তু বিড করা ছেড়ে দিবেন না। বিড আপনাকে করে যেতেই হবে। সেই সাথে লোকাল মার্কেটেও আপনাকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এতে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকবে। আর একদিন না একদিন আপনি ইনশআল্লাহ কাজ অবশ্যই পাবেন।

ধাপ-৯ : ধরেন আপনি কোন বড় কাজের বিড করলেন এবং কাজটি পেয়েও গেলেন। এখন আপনিতো আর একা কাজ করে কুল কিনারা পাচ্ছেন না। এখন কি করবেন? ভয়ে গুটিয়ে থাকবেন? না কখনই না আপনার সিনিয়র ভাইদের সাথে কথা বলুন। আপনাকে হেল্প করতে বলুন। আর আপনার বন্ধু দের মধ্যে যারা বিড করতে করতে অধের্য্য হয়ে গেছে কিন্তু কাজ পাচ্ছে না, তাদেরকে আপনার কাছে টানুন এবং সকলে একসাথে গ্রুপিং করে কাজটি শেষ করুন। এতে আপনি হয়ে যাবেন গ্রুপ লিডার এবং আপনার বন্ধুরাও কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারল। সেই সাথে আপনার জন্য প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে আপনার ওডেক্স প্রোফাইল সমৃদ্ধ হল। যা পরিবর্তীতে আরোও বড় কাজে পেতে আপনাকে সহায়তা করবে। আর যেহেতু আপনিই কাজ গুলো ওডেক্স থেকে বিড করে নামাচ্ছেন সেই ক্ষেত্রে আপনি আপনার সহকারীদের কাছ থেকে অল্প বেনিফিট কেটে রাখতে পারেন।

Facebook Comments

Leave a Reply