0
  Login
কিভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করলে কম্পিটিটরদের কন্টেন্ট কে টপকাতে পারবেন?

কিভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করলে কম্পিটিটরদের কন্টেন্ট কে টপকাতে পারবেন?

সিনিয়র ভাইরা বলবেন, ক্যান লিঙ্ক বিল্ডিং করে? এমন হাই কোয়ালিটি লিঙ্ক নিতে থাকবো যে র‍্যাঙ্ক করতেই হবে।কথাটা আসলেই ঠিক,লিঙ্ক বিল্ডিং আসলেই একটা শক্তিশালী মাধ্যম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, গুগলের আজীবন স্বপ্ন হলো যতো রকমের অস্বাভাবিক লিঙ্ক বিল্ডিং আছে (তার চোখে) সেগুলাকে বন্ধ করা।

এখন এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সে কি করছে? সে প্রতিনিয়ত নিজের বুদ্ধিকে শান দিচ্ছে। আপনার আমার থেকে প্রতিদিন ডাটা নিচ্ছে, শিখতেসে কিভাবে কনটেন্ট কে পড়া যায়, পড়ে বোঝা যায়। আশা করছে কোন একদিন আপনার আমার মত কনটেন্ট পড়ে পুরোপুরি বুঝে যাবে কে কাকে কি বলছে।

 

যেমন ধরেন একটা সময় এক্সাক্ট ম্যাচ ডোমেইন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর ছিলো, এখন সেটা ওইভাবে নেই। এভাবে গুগলের সব আপডেট আসছে অস্বাভাবিক লিঙ্ক বিল্ডিং, থিন কনটেন্ট এগুলোকে টার্গেট করে।

আসলে গুগল আমাদের কাছে কি চায়? খুব সামান্য একটা জিনিস, সেটা হচ্ছে প্রত্যেকটা বিষয়ের উপর সম্পূর্ণ, একদম রিলেভেন্ট একটা লেখা যেটা ভ্যালু প্রোভাইড করবে,মানে যারা এই বিষয় নিয়ে গুগলে খুঁজছে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিবে।

লিঙ্ক বিল্ডিং অবশ্যই দরকার, কিন্তু তার আগে যেই আর্টিকেলটার উপরে লিঙ্ক বিল্ডিং করবো সেটা তো হতে হবে টপ কোয়ালিটি। কারও কাছে এটা হচ্ছে পিওর হোয়াইট হ্যাট, কারও কাছে ভ্যালু প্রোভাইড করে অনেক বেশি ট্রাফিক আনা, আর আমার মতো খুঁতখুঁতে কনটেন্ট রাইটারের কাছে এটা একটা ম্যানিয়া।

একটা আর্টিকেল দেখলে আমি চেষ্টা করি ভাবতে, এটার থেকে ভালো আর্টিকেল কিভাবে লেখা যায়। পকেটে ডলার নাই লিঙ্ক বিল্ডিঙয়ের, টপ কিওয়ার্ড রিসার্চ আর লেখাটাই তো র‍্যাঙ্ক করার সবচে বড় ভরসা আমার মত গরীবের।

তাহলে কিভাবে আমার কম্পিটিটরদের থেকে ভালো আর্টিকেল লেখা যায়? তিনটা পয়েন্ট দেখে নেই।

১। প্রশ্ন খুজে বের করুন, সহজ ইংরেজিতে সার্চ ইনটেন্ট। সার্চ ইনটেন্ট বলতে কিওয়ার্ডটা যারা সার্চ করছে তারা কি জানার জন্য সার্চ করছে? তাদের কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছে, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি? এই কিওয়ার্ড এর সাথে আপনার পরিচয় থাকলে চেষ্টা করুন নিজের জীবনের সাথে লিঙ্ক করতে, আপনি এই কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করলে আপনার প্রশ্নগুলো আসলে কি হতো এইক্ষেত্রে?

সহজ ব্যাপার, তাই না? তাহলে একবার ভাবুন তো কেন নেইল প্যাটেল,ব্রায়ান ডীন বা আমাদের দেশের মার্কেটএভারের পোষ্ট গুলা ভাইরাল হচ্ছে,শেয়ার হচ্ছে কিন্তু আপনার আমারটা না?

উত্তর হচ্ছে কখনও কখনও আমরা গৎবাঁধা আর্টিকেল স্ট্রাকচার নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত থাকি যে নিজেকে একবারও প্রশ্ন করা হয়না, আসলে রিডার কি খুজছিলো? এটা ভাবলে পুরো চিন্তাটাই পরিবরতন হয়ে যেতো, চমৎকার এটা স্ট্রাকচার মনের মধ্যেই দাড়িয়ে যেতো। কম্পিটিটরদের সারাদিন ঘেঁটে কারটা কপি করা যায় এটা ভাবতে হতোনা।

যেমন, একজন ইউজার এসেছে Best Watch কিনতে, কিন্তু আমি তাকে খুব সহজে উত্তরটা পাবার পথ না দেখিয়ে অনেকক্ষণ ঘুরালাম Importance of Watch নিয়ে। এটা করলাম কারন আমার ওয়ার্ড কাউন্ট বাড়বে আর কম্পিটটররা তাই করেছে।অথচ সে Importance জানে বলেই তো জিনিসটা খুজতে এসেছে,এটাই কি স্বাভাবিক না?

রিডাররাও তো আর বোকা না, তারা প্রথম কিছু লাইন পড়েই বুঝে নিবে এখানে কথার প্যাচ চলছে। আরামসে পেইজ লীভ করবে তো বটেই, খেয়াল থাকলে আর কখনও এইমুখো হবে না।

ভাবতেসেন আপনার কি আসে যায়?অনেক কিছু। গুগলের র‍্যাঙ্কিংয়ের একটা বড় ফ্যাক্টর হলো রিডার স্যাটিসফ্যাকশন,এঙ্গেজমেন্ট। আর এটা সে কাউন্ট করবে আপনি রিডারকে কতক্ষন ধরে রাখতে পেরেছেন এটা দিয়ে।

মোদ্দা কথা খুব সহজ সুন্দরভাবে রিডারকে তার প্রশ্নের উত্তরটা দিয়ে দিন, বাড়তি কথা লিখলে এটা কেনো তাদের জানা দরকার একটু ব্যাখ্যা করুন।এই ভদ্রতায় খুশি হয়ে রিডার আপনার সাইট বুকমার্কও করে রাখতে পারে, আমি যেভাবে বুকমার্ক করে রাখি প্রত্যেকটা ভদ্র সাইট।😉

২। তথ্য, তথ্য, তথ্য। আগের একটা লেখায় বলেছিলাম ( আগের লেখাটার লিঙ্ক হবে)। জমাট তথ্যের মিশেলে ভালো লেখার স্বাদ দিতে হবে পাঠককে। তথ্য বোরিং না হয়ে অনেক ইন্টারেস্টিং ও হতে পারে যদি তথ্যগুলো তাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এখন, তথ্যের ক্ষেত্রে আপনার কম্পিটিটরদের আপনি ছাড়িয়ে যেতে পারবেন যদি আপনার আনকমন সোর্স থেকে তথ্য বের করার ক্ষমতা থাকে।

অনেকসময় আর্টিকেল লিখতে যেয়ে খেয়াল করি একই তথ্য সব গুলো সাইটে একই ভাবে দেয়া আছে।এটা বাতিল করে দিচ্ছিনা, কিন্তু একটা আদর্শ দুনিয়াতে আপনি আপনার রাইটাকে সময় দিবেন, সুযোগ দিবেন আনকমন সোর্স, যেমন সার্ভে,রিসার্চ পেপার, অথরিটি জার্নাল থেকে তথ্য এনে আপনার লেখাকে ব্যাকআপ দেয়ার জন্য। রঙচঙে বাটন আর থিন কনেন্ট থেকে এই লেখাগুলাই ভাইরাল হয় বেশি এবং দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হয়।

৩। কনটেন্ট ফরম্যাট এবং অন পেজ।ইদানিং যে কোন নিশ সাইটে ঢুকলেই রঙের বাহারে বের হয়ে আসি। সেই একই থ্রাইভ দিয়ে করা একই রকম স্ট্রাকচার, একই রকম কম্পারিজন টেবল। এখন নিশ সাইট এখন আর টেস্ট নাই, আইপিএল হয়ে গেছে। যদি আপনি দেখেন, আপনার কম্পিটিটররা এমন কিছু করছে, ভালো হবে আপনি ক্লিন, রুচিশীল একটা স্ট্রাকচার ব্যবহার করলে, প্রচলিত ট্রেন্ড থেকে বের হয়ে রিডারদের একটু শ্বাস নেয়ার সুযোগ দিলে। সিম্পল ডিজাইনই কিন্তু আপনার অথরিটি বাড়িয়ে দেয় রিডারের কাছে।

কম্পিটিটরদের অনপেজ জনিত দুর্বলতাগুলোকে ভালোভাবে ব্যবহার করুন। আর্টিকেল কিওয়ার্ড অপ্টিমাইজড করুন, লংটেইলগুলোকে ন্যাচারালি বসিয়ে দিন। URL, Meta Description, Title আর Article এ পরিচ্ছন্নভাবে কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। সাইটের স্পিড বাড়ান। লেখাকে ভিজুয়াল কনটেন্ট (ভিডিও,ছবি) দিয়ে সাজিয়ে তুলুন।অনপেজের জন্য আমার কাছে বেস্ট গাইড ব্রায়ান ডিনের On Page SEO. (http://backlinko.com/on-page-seo).

তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো? একটা কিওয়ার্ড পেলেন, এটাকে একটু সময় দিন এবং নিচের কাজগুলো করুন।

  • এটা লিখে কেন সার্চ করছে মানুষ?
  • সেই প্রশ্ন গুলোকে সুন্দরভাবে টু দ্যা পয়েন্ট উত্তর দিন।
  • ডাটা দিন আপনার কথার স্বপক্ষে,ভিজুয়াল ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করুন।
  • সবশেষে ভালোভাবে আর্টিকেলের অনপেজ অপ্টিমাইজ করুন।
  • গ্যালারিতে পপকর্ন নিয়ে বসুন এবং কিছুদিন সময় দিয়ে কতদূর যায় দেখুন। এই ফাকে কিছু সোশাল শেয়ারিং করতে থাকবেন। যদি পাগলেরে সাকো ধরায় দেয়ার মতো আপনার কনটেন্ট টার্গেটেড পাগল, মানে রিডারের কাছে পড়ে, তাহলে ভাইরাল হতে সময় লাগবেনা।

সবশেষে একটা মজার কথা বলি। এই সময়ে এসে কেউ কারো কথা শুনতে চায়না, খালি বলতে চায়।আপনি একটা আড্ডায় বসলে দেখবেন কেউ কারও কথা শুনছে না,নিজের কথাই বলছে। তারা শুনলেও সেটা Hearing হচ্ছে, Listening and Paying Attention হচ্ছে না। Hearing আর Listening এর মধ্যে পার্থক্য আছে।

মানুষের কথা শুনুন,অনেক কিছুই শিখতে পারবেন। রিডার কি বলতে চায় শুনুন, তারপর তাকে রেসপন্স করুন, তার সমস্যার উত্তরগুলো দিন। গ্লাস খালি না করলে গ্লাসে পানি ভরা যায়না। আগে তার কথা শুনুন, তারপরে তাকে কিছু প্রশ্ন করুন, তার কৌতূহল তৈরি করুন, তারপরে তার মনের গ্লাসে পানি ভরুন। সে খুশি মনে তার উত্তরটা পেয়ে যাবে আর আপনি পাবেন ডলার।

Leave a Reply