0
  Login
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সফলতার সূত্র

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সফলতার সূত্র

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংই নয় সকল বিষয়ে পড়া শিক্ষার্থীর জন্য এই সূত্র গুলো বাস্তবিক পরীক্ষিত, যা শিক্ষা ক্ষেত্রে সফলতা বয়ে আনে। এই সূত্রগুলো শিক্ষাজীবনে শিক্ষার্থীকে করে তোলে জ্ঞানী ও কর্মক্ষেত্রে করে তোলে অভিজ্ঞ। আমরা অনেকেই এর অনেকগুলো জানি, তবে শিক্ষাজীবনের ধাপে ধাপে চাপের সম্মুখীন হয়ে ভুলে যাই বা বাস্তবায়ন করার সময়ই পাই না।

বাংলাদেশে চাকরির অভাব নেই। অভাব আছে দক্ষ ব্যাক্তির। তাই পদশূন্য রেখে কম জনবল নিয়ে এগোচ্ছে আমাদের সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। আর আমরা নিজেদের অদক্ষতাকে ঢাকতে চাকরি নেই বলে বেড়াচ্ছি। দেখবেন প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে অভিজ্ঞ তথা কাজ জানে, পারে এমন দক্ষ কর্মী চায়। কিন্তু আমাদের দেখুন, আমরা শুধু প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নিয়ে নামমাত্র সার্টিফকেট হাতে চাকরির সন্ধানে নেমে পড়ি। আর বরাবরের মতই চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে যাই।
এরপর গালি দেই, ডিপ্লোমা যে কেন পড়ছিলাম……. মানছি, দোষ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার, আমাদের কারিগরি বোর্ডের। কিন্তু আমরাও সমান দোষে দোষী। কারণ, আমরা এর সমাধানের কোন চেষ্টাই করি না। এবার আসুন জেনে নেই—-কি এর সমাধান, কিইবা হতে পারে আমাদের সফলতার সূত্র।

১. আপনি যে বিষয়ে পড়ছেন, সেই বিষয়ের ইংরেজী নামকরা রাইটারের বইগুলো পড়ুন একটু নাড়াচাড়া করুন।

২. আপনি গ্রপ স্টাডি করুন। সমস্যা বের করুন ও সমাধান করুন প্রত্যেকে আলাদা আলাদা ভাবে।

৩. আপনার ডিপার্ট্মেন্ট এ ডিপার্ট্মেন্টাল বা সাবজেক্ট ভিত্তিক ক্লাব বানান, দু একজন ভাল শিক্ষককে সাথে নিন।

৪. আপনার ক্যাম্পাসে কোন ডিভাইসের বা কোন সমস্যা হল। তা আপনার সাবজেক্টের দ্বারা সমাধান করা সম্ভব হলে, সমস্যার সমাধান করুন। বাস্তব জ্ঞান লাভ করবেন।
* স্যারের সহায়তায় বিভিন্ন প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশনে অংশগ্রহন করুন। সারদের রিচার্সে সহায়তা করুন।

* ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল্গুলো পড়ুন। হাভার্ড, কেম্ব্রিজ এর ওপেন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট সলভ করুন।
* বিভিন্ন দেশের সাইন্সফেয়ার, সহ নানা টেক ফেয়ারের প্রজেক্টগুলো নিয়ে গবেষণা করুন।
* আপনার পড়া সাব্জেক্টের শেখা জ্ঞান থেকে নতুন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নিন।

৫. আপনি যে বিষয়ে পড়ছেন সে বিষয়ের কর্মক্ষেত্র গুলোতে সিভি/বায়োডাটা/রিজিউম ড্রপ করুন বা আবেদন করুন, বিনা পয়সায় কাজ করে দেয়ার জন্য।প্রয়োজনে আপনি কিছু টাকা দিন ওদেরকে। এর মাধ্যমে আপনি আপনার সাবজেক্টের রিয়েল প্র্যাকটিস করতে পারবেন ও প্রফেসনাল কাজ শিখতে পারবেন। খবরদার, দু’তিন মাস পড়ে মাইনে বা বেতন চাইবেন না। শিখতে থাকুন প্রতিদিন বা সপ্তাহে তিন বা চার দিন করে। শিখতে শিখতে আর কোন নতুন শিখার কিছু পাচ্ছেন না তখন ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ে আরো বড় প্রতিষ্ঠানে একইভাবে আবেদন করুন কাজ শিখুন। এভাবে আপনার দুই বা তিন বছর পার করুন। ভুলেও এর মাঝে পার্ট টাইম ইনকামের জন্য লাফালাফি করবেন না। কারণ, যারা ইনকাম করে তারা আর শিখতে পারে না। চতুর্থ বছরে পার্ট-টাইমের কাজের জন্য ঐ প্রতিষ্ঠানে বা অন্য কোথাও যোগ দিন। কাজ করতে থাকুন, আর শিখতে থাকুন।

৬. ইন্টার্নি বড় কোন প্রতিষ্ঠানে করুন, তবে অবশ্যই সেটা যেন আপনার বিষয়ভিত্তিক হয়।

৭. ইণ্টার্নিতে অনেক সময় পাওয়া যায়, পড়া, কাজ এগূলোর চাপ কম থাকে। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে আপনার উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে ভাব জমিয়ে ফেলুন। যেখানে যেখানে কাজ করছেন, সেখানে সেখানে সব মানুষের সাথে ভাব জমান তাদের কাজে সহয়তা করুন। আপনি এডভান্স লেভেলের কাজ শিখতে পারবেন। জানার পরিধিও বাড়বে।

৮. ফুল টাইম কাজে ঝাপ দিন। আপনি আপনার সেলারি নিজেই নির্ধারণ করুন আর ভাল প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করুন। এখানেই আপনার সফলতার জীবন শুরু হল।

সূত্রগুলো পালন করা এমন কোন কঠিন কাজ নয়, আর যদি কঠিন মনে হয় তো হল। এতে আপত্তি করবেন না। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এটা মেনে চলবেন। আপনি পড়ছেন, শিখছেন–এর মাঝে আপনার অনেক ফ্রেন্ড কে দেখবেন যে তারা ভাল টাকার চাকরি করছে। আর আপনি শিখছেন। চিন্তা করবেন না, আপনি যখন চাকরি করবেন তখন দেখবেন তাদের  চেয়ে আপনার স্যালারি এতটাই বেশি হবে যে আপনি ওই ফ্রেন্ডগুলোকে দু-থেকে তিন মাসেই ক্রস করে ফেলবেন। কারণ, আপনার অভিজ্ঞতাটার দামটা অনেক বেশি।
আপনার সফলতায় মগ্ন হয়ে থাকবেন না, বি,এস,সি করুন ভালো ইউনিভার্সিটি থেকে। সময় আপনাকে সন্মান দেবে, জীবন হবে সফলতায় পূর্ণ।

ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন—সকল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের উন্নতি প্রত্যাশায়-আজ এইটুকুই। পরেরবার আলোচনা করব নতুন কোন বিষয় নিয়ে।

Facebook Comments

Leave a Reply