বিজনেসের প্রসারে ডিজিটাল মার্কেটিং কতটা প্রয়োজন
ডিজিটাল মার্কেটিং প্রসঙ্গে বিখ্যাত কফি ব্র্যান্ড স্টারবাকস এর চেয়ারম্যান ও সিইও বলেছিলেন,
“SOCIAL AND DIGITAL MEDIA IS A BULLET TRAIN, AND THAT BULLET TRAIN IS NOT COMING HOME.”
ডিজিটাল মার্কেটিং এভাবেই দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আপনাকে এই গতির সাথে মানিয়ে নেবার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগের ধরন ও প্রকৃতিতে ক্রমাগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
যখন মানুষ প্রযুক্তির ব্যবহার জানতো না, সে সময় তারা জনসমাগম আছে এমন জায়গায় ঢোল পিটিয়ে কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রচারণা চালাতো।
ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে থাকলো সভ্যতা, তার সাথে পরিবর্তিত হতে থাকলো বিজনেসে মার্কেটিং এর ধরন।
পত্রিকা, বিলবোর্ড, রেডিও, টেলিভিশনের পরে বর্তমান সময়টা এখন ইন্টারনেটের।
ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সকল মাধ্যম ডিজিটাল। আপনি এটিকে কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারবেন না।
হয়তো এর পরে নতুন কোন যুগে আমরা প্রবেশ করবো মার্কেটিং এ আবার নতুন কোন পরিবর্তন আসবে।
Ad65.com তথ্য মতে ২০১৯ সালের জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯১.৪২ মিলিয়ন যাদের মধ্যে ৮৫.৬৩ মিলিয়ন মোবাইল ব্যবহারকারী।
আমরা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ফেসবুক বিজ্ঞাপনগুলির জন্য ৩০০% মূল্যবৃদ্ধিও দেখেছি (অ্যাডপ্রেসো অনুসারে)।
এই সমস্ত উদ্বেগ সত্ত্বেও মানুষ দুটি কারণে মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুকের সাথে লেগে রয়েছে। কারণ দুটির মধ্যে,
প্রথমত ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষত ৩০ থেকে ৩৬ বয়সের মধ্যে যাদের বয়স তারা এই প্ল্যাটফর্মে অত্যন্ত সক্রিয়।
এর অর্থ এই কাস্টমার গ্রুপের মধ্যে পড়া ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে আপনার পণ্যগুলি মার্কেটিং করার জন্য এটি দুর্দান্ত সময়।
দ্বিতীয়ত প্রিন্ট ও টেলিভিশন মিডিয়াতে মার্কেটিং করার জন্য খরচ করা অর্থের চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং এর জন্য অর্থ বেশি পরিমান লাভজনক।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি
সহজ কথায় বলতে গেলে, ডিজিটাল মার্কেটিং হলো ডিজিটাল চ্যানেল যেমন ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে মার্কেটিং করা ও কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা।
ডিজিটাল মিডিয়া মার্কেটিং এর উদাহরনঃ
- সোশ্যাল মিডিয়া ( ফেসবুক, ইন্সট্রাগ্রাম ইত্যাদি)
- ওয়েবসাইট
- কন্টেন্ট মার্কেটিং
- ইনবাউন্ড মার্কেটিং
- ইমেল মার্কেটিং
- পি পি সি
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
২০১৮ সালে বাংলাদেশের ডিজিটাল এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কিছু তথ্য এবং পরিসংখ্যান
- বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৬.৫ মিলিয়ন যার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৮১.৮৮ মিলিয়ন
- একটিভ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ৩০ মিলিয়নেরও বেশি
- দেশে একটিভ মোবাইল কানেকশন রয়েছে ১৩৭.২ মিলিয়ন
- মবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পরিমান ৭৬.২২ মিলিয়ন
- ৪৮% মানুষ সামাজিক মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার করে।
- ৩% মেয়ে আর ০.৫ % পুরুষ কাস্টমার অনলাইনে পেমেন্ট করতে পছন্দ করে
ফেসবুক মার্কেটিং
ফেসবুক বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম পাশাপাশি বিজনেসের প্রচার প্রচারণায় এটির গুরুত্ব দিন দিন বেড়ে চলেছে।
২০১৯ সালে, বিজ্ঞাপন থেকে ফেসবুকের আয় হয়েছিলো প্রায় ৬৯.৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০১৯ এর চতুর্থ ত্রৈমাসিক হিসাবে মাসিক ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা কমপক্ষে ২.৮৯ বিলিয়ন যারা ফেসবুকের সকল প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে (ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, বা ম্যাসেঞ্জার) প্রতিমাসে কমপক্ষে একটি ব্যবহার করছে।
যে ৬ টি সুবিধার জন্য আপনার বিজনেসের ফেসবুক মার্কেটিং করবেন
বিশ্বব্যাপী সফল মার্কেটিং করতে
ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পোঁছানোর একটি যথাযথ উদাহরণ “ডাভ রিয়েল বিউটি স্কেচস” ক্যাম্পেইন।
ক্যাম্পেইনটি ২০১৩ সালে কার্যকর করা হয়েছিল। এফবিআই স্কেচ শিল্পীরা অংশগ্রহণকারীদের তাদের মুখের ছবির বর্ণনা করতে বলেছিলেন, তারপরে তাদের আত্মীয় এবং বন্ধুদের একই কাজ করতে বলা হয়েছিল।
তারা ফলাফলে দেখিয়েছে যে বেশিরভাগ লোকেরা নিজেরাই নিজেদের অত্যধিক সমালোচনা করছেন। ক্যাম্পেইনটি ফেসবুকে প্রকাশের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে ৬৩০,০০০ বার শেয়ার করা হয়েছে।এই ধরণের অনেক বিশাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের সফলতার উদাহরন ফেবুকের রয়েছে।
কম মার্কেটিং খরচ
যাদের বিজনেস ছোট এবং ওয়েবসাইট নেই তারা একটি ফেসবুক পেজ বিনা মূল্যে তৈরি করতে পারেন।
সেখানে তাদের প্রোডাক্টগুলো সমস্ত তথ্য প্রদর্শন করতে পারে।এবং কেবল মাত্র আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের টার্গেট করে ফেসবুক বিজ্ঞাপন দেখানো সক্ষম।
ফেসবুক বিজ্ঞাপন বাজেট-বান্ধব। ব্যবহারকারীর জন্য কি উপযুক্ত তার উপর নির্ভর করে বিজ্ঞাপনগুলি বিভিন্ন ভাগে চার্জ করে।
সিপিএম এবং সিপিসি দুটি জনপ্রিয় চার্জিং পদ্ধতি। সিপিএম (প্রতি মিলিয়ন ব্যয়) প্রতি হাজার ইমপ্রেশন চার্জ করা হয় যেখানে সিপিসি (প্রতি ক্লিক ক্লিকের জন্য) প্রতি ক্লিকে প্রযোজ্য।
ব্যবহারকারীরা তাদের বিজ্ঞাপনের বাজেট সীমা নির্ধারণ করতে পারেন। ফেসবুকের বিজ্ঞাপনের ফলাফল প্রত্যাশিত না আসলে সেটি সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন ফেসবুক বিজ্ঞাপন সংস্থার গবেষণাগুলিতে দেখা গেছে যে বেশিরভাগ শিল্পের জন্য ফেসবুক বিজ্ঞাপনের গড় খরচ প্রতি ক্লিকে ০.৫ থেকে ২.০০ ডলারের মধ্যে।
উপযুক্ত কাস্টমারদের টার্গেট করে মার্কেটিং করা যায়
ফেসবুক বিজ্ঞাপনগুলির একটি অনন্য সুবিধা রয়েছে সেটি হলো আপনাকে সম্ভাব্য গ্রাহকদের ডেমোগ্রাফিক এবং আগ্রহের ভিত্তিতে টার্গেট করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি তরুণদের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করতে চান। আপনি চান তারা আপনার বিজনেস এবং প্রোডাক্ট নিয়ে আগ্রহ রাখে। আপনি চান বড় শহরগুলিতে বসবাসরত, মধ্যবিত্ত জীবনযাত্রার ৩৫ বছরের কম বয়সী কাস্টমার। তবে ফেসবুক বিজ্ঞাপনের দ্বারা সেটি করা সম্ভব।
ওয়েবসাইট ট্রাফিকের পরিমান বাড়ায়
ফেসবুক মার্কেটিং এর আর একটি বড় সুবিধা হচ্ছে এটি ব্যবহার করে আপনার বিজনেস ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়াতে সক্ষম হবেন।
Jabong.com ফেসবুকের উপর নির্ভর করে ভালো মানের অডিয়েন্স টার্গেট করে তাদের সেল বাড়িয়েছিল। এপ্রিল ২০১৭ সালে Jabong.com সঠিক পণ্যগুলি সঠিক লোকের কাছে পৌঁছে দিয়ে তারা উল্লেখযোগ্যভাবে কাস্টমার বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে।
ভারতের এই ই-কমার্স সংস্থা তার গ্রাহক সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে এবং ফেসবুককে শীর্ষস্থানীয় মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে বেছে নেবার পরে কাস্টমার দ্বারা তাদের মোবাইল অ্যাপ অ্যাক্টিভেশন পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দরকারী তথ্য সরবরাহ
আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করার পরে, সেখান হতে প্রচুর দরকারী তথ্য পাবেন। পেজের লাইকের সংখ্যার তথ্য, আপনার পোস্টের মোট রিচ ইত্যাদি।এছাড়া কমেন্ট ও শেয়ারের নির্দিষ্ট সংখ্যা পরিমাপ করতে পারবেন। একটি মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করার সুযোগ রয়েছে।
ওয়েবসাইট মার্কেটিং
ওয়েবসাইট মার্কেটিং হলো আপনার ওয়েবসাইটটি ইন্টারনেটে প্রচার করার প্রক্রিয়া। এটি আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর কৌশলের অংশ হিসেবে একটি অনলাইন মার্কেটিং চ্যানেল।ওয়েবসাইট মার্কেটিং এর মূল লক্ষ্যটি হলো ওয়েবসাইটে ভিজিটর সংখ্যা বাড়ানো।
বিজনেসের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়
এটি আপনার বিজনেসকে বৈধতা দেয় এবং আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা উন্নত করে। এটি বিজনেসের ভার্চুয়াল প্রমাণ যে সত্যিকার অর্থেই আপনার বিজনেসটি রয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে যে ৮৪% গ্রাহকরা বিশ্বাস করেন যে কোনও ওয়েবসাইট আপনার বিজনেসকে কেবল একটি সামাজিক মিডিয়া পেজে থাকার চেয়ে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে।
বিজনেসের অনলাইন উপস্থিতি বৃদ্ধি করে
এই পৃথিবীতে ৭.৪ বিলিয়ন মানুষ রয়েছে তাদের মধ্যে প্রতিদিন ৩.৫ মিলিয়ন মানুষ অনলাইনে থাকে যা মত জনসংখ্যার ৪৭% । এসময় তারা তথ্য অনুসন্ধান করছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটিয়েছে অথবা ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কেনাকাটা করছে। তাই আপনার বিজনেসটিকে তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হলে থাকতে হবে ওয়েবসাইট আর সাথে সেটির মার্কেটিং।
বিজনেসের রিয়েল টাইমে ট্র্যাক রাখা
একটি ছোট বিজনেসের জন্য ওয়েবসাইট থাকার উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাস্তব সময়ে তার পারফরম্যান্সের উপর নজর রাখতে পারবেন।
আপনার বিজনেস বর্তমানে কীভাবে চলেছে সে সম্পর্কে বিশ্লেষণধর্মী মূল্যবান ডেটা সরবরাহ করবে। বিজনেস পারফরম্যান্সের সূচকগুলো যেমন, আপনার ওয়েবসাইটে আশা ভিজিটর সংখ্যা। পেজ ভিজিট বা কোন পেজগুলো কতবার পরিদর্শন করা হয়েছে সে সকল তথ্য। বাউন্স রেট বা আপনার পেজে অবতরণ না করেই আপনার ওয়েবসাইটটি ছাড়েন ছেড়ে গেছেন এমন ভিজিটরের তথ্য সহ আর অনেক তথ্য আপনি পাবেন।
কন্টেন্ট মার্কেটিং
একটি কৌশলগত মার্কেটিং পদ্ধতি যা টার্গেট অডিয়েন্সদের মনোযোগ আকর্ষণ এবং তাদের ধরে রাখার জন্য মূল্যবান, প্রাসঙ্গিক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়বস্তু তৈরি এবং প্রদানের মাধ্যমে তাদের কাছে প্রোডাক্টের প্রচার করাকে কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো ।
কেনো করবেন কন্টেন্ট মার্কেটিং ?
আপনার ব্র্যান্ডের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি করে
সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে মানসম্পন্ন কন্টেন্ট প্রচার করার ফলে যারা তাদের সমস্যার সমাধান খুঁজছেন তাদের সামনে আপনার ব্র্যান্ডটি পেয়ে যায়।
আপনার শ্রোতাদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলে
যদি আপনি ক্রমাগত আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট সরবরাহ করেন তবে তারা আপনার বিজনেসের দিকে ঝুঁকবে।
ব্র্যান্ড সচেতনতা
ছোট বিজনেসগুলো তাদের টার্গেট অডিয়েন্সদের সামনে তাদের ব্র্যান্ডটিকে তুলে ধরতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। আপনি যদি এমন কোনও কন্টেন্ট তৈরি করেন যা একজন কাস্টমার আপনার পেজে খুঁজে পায় তখন সেটি আপনার ব্র্যান্ডের সুনামকে প্রভাবিত করে।
আপনার বিজনেসকে বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত করে
বিজনেসে আপনি যে দক্ষ তার পরিচয় দিলে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই প্রথমে আপনার থেকে উত্তরগুলির সন্ধান করবে।তাই সবার থেকে এগিয়ে থাকতে প্রয়োজন কন্টেন্ট মার্কেটিং।
আপনার গ্রাহককে দ্রুত ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে
যদি আপনার কন্টেন্ট তাদের সমাধানের দিকে নিয়ে যায় তবে তারা আপনাকে প্রাধান্য দিবে। যদি সঠিকভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং দ্বারা ক্রেতার একটি বায়িং জার্নির অভিজ্ঞতা প্রদান করতে সক্ষম হন তবে যখন তারা কিনতে প্রস্তুত হবে তখন তারা আপনার বিজনেসকে বেছে নিবে।
ইনবাউন্ড মার্কেটিং
কনটেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এবং ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে কাস্টমারদের প্রোডাক্ট এবং সেবার প্রতি আকর্ষণ করার কৌশলকে ইনবাউন্ড মার্কেটিং বলা হচ্ছে।
আপনার ওয়েবসাইটকে আপনার এক নম্বর বিক্রয় এবং বিপণনের সরঞ্জামে রূপান্তরিত করতে ইনবাউন্ড মার্কেটিং দারুন । এটি চব্বিশ ঘন্টা কাজ করে, এবং কখনও থামে না।
এর সুবিধাগুলো কি?
- সেল নিয়ে আসতে ভালো মানের লিড তৈরি করে
- আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে কাস্টমারদের ভালো ধারণা দেয় ও সম্পর্ক উন্নত করে
- কাস্টমারদের শিক্ষিত করে তোলে তাদের আস্থা অর্জন করে
- মার্কেটিং পদ্ধতিকে সহজ করে
ইমেইল মার্কেটিং
ইমেল মার্কেটিং হলো প্রোডাক্ট ও সার্ভিস প্রচারের জন্য ইমেল ব্যবহার।
ইমেইল মার্কেটিং এর প্রধান সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে,
লক্ষ্যযুক্ত এবং ব্যক্তিগতকরন
আপনাকে কাস্টমারদের কাছে ব্যক্তিগত তাদের পছন্দের উপর ভিক্তি করে কন্টেন্ট প্রদান করা যায়।
ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি
আজ বিশ্বের বেশিরভাগ স্বীকৃত ব্র্যান্ড তাদের মার্কেটিং কৌশলে ইমেইল মার্কেটিং প্রাধান্য দেয়। ই মেইলের মাধ্যমে সরাসরি একজন কাস্টমারদের ইনবক্সে পৌঁছানো সম্ভব । যা একটি ব্র্যান্ডকে পরিচিত করতে সহায়ক।
সেল বাড়ায়
মার্কেটিং উইক এর মতে ই মেইল মার্কেটিং বছরে ৩৭ বিলিয়ন ডলার সেল নিয়ে আসে।কাস্টমার যখন এমন কোন প্রোডাক্টের ইমেল পান যা তিনি খুঁজছেন সেই ইমেল তারা গুরুত্ব দিয়ে পড়েন।
সময় এবং বাজেট বাঁচায়
বিক্রেতা সরাসরি একজন কাস্টমারের ইনবক্সে তার প্রোডাক্টের তথ্য পৌঁছে দিতে পারেন। ফলে তাদের সময় ও কাস্টমারদের কাছে পৌঁছানোর খরচ দুটোই সাশ্রয় হয়।
পি পি সি (Pay per click)
পিপিসি একটি অনলাইন বিজ্ঞাপনের মডেল যেখানে প্রতিবার ব্যবহারকারী তাদের অনলাইন বিজ্ঞাপনগুলির মধ্যে একটিতে ক্লিক করলে তার বিনিময়ে বিজ্ঞাপনদাতারা অর্থ প্রদান করে। এটি ফেসবুকের বিজ্ঞাপন মডেল হিসেবে জনপ্রিয়।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEO)
কোনও ওয়েব অনুসন্ধান ইঞ্জিনের ব্যবহারকারীদের কাছে ওয়েবসাইট বা ওয়েব পৃষ্ঠার দৃশ্যমানতা বাড়িয়ে ওয়েবসাইট ট্র্যাফিকের গুণমান এবং পরিমাণ বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলে।
SEO এর সুবিধাগুলো হলো,
- এটি ভালো মানের লিডের অন্যতম উৎস
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর সেলস ক্লোজ রেট বা সেলস হবার পরিমান অনেক বেশি যা প্রায় ১৪.৬%
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর ফলে সার্চ সাইটগুলো কাস্টমারদের ফিজিক্যাল স্টোরে ভিজিট করতে উৎসাহী করে।
- এটি ব্র্যান্ডেে প্রতি আস্থা বাড়ায়
ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং কি
মার্কেটিং এর আদি রুপ, যেমন প্রিন্ট মিডিয়া, বিলবোর্ড, টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেল ব্যবহার করে মার্কেটিং পরিচালনা করা। ১৯৯০ সালের আগে পর্যন্ত আমার একটি মাত্র মার্কেটিং ধারনার সাথে পরিচিত ছিলাম। সেটি হচ্ছে, ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং।
উদাহরন,
- আউটডোরঃ বিলবোর্ড , বাস বা কার ব্রান্ডিং, পোষ্টার ইত্যাদি
- প্রচার মাধ্যমঃ টেলিভিশন, রেডিও ইত্যাদি
- প্রিন্টঃ ম্যাগাজিন, নিউজপেপার
- ডিরেক্ট মেইলঃ ক্যাটালগ
- টেলি মার্কেটিং
কোন ধরনের মার্কেটিং পদ্ধতি আপনি ব্যবহার করবেন?
বিজনেসে ডিজিটাল ও ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর বালান্স থাকাটা জরুরী। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে একটি মাত্র মার্কেটিং পদ্ধতি আঁকড়ে থাকতে চলবে না। তাই ডিজিটাল ও ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং একই সাথে থাকাটা প্রয়োজন।
ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর সুবিধা ও অসুবিধা
সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থানে এই মার্কেটিং পদ্ধতিকে বিক্রেতাদের দ্বারা অবমূল্যায়ন হতে দেখা যায়।
কাস্টমার প্রতিদিনের জীবনে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর একটি জায়গা সব সময় ছিলো এখনো আছে।
তবে এটি খরচ সাপেক্ষ হওয়াতে কেবল যদি আপনার বাজেট থাকে তবে এই মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং কার্যকারী, সহজে বোধগম্য এবং স্থায়ী। কিন্তু পরিমাপ করা কঠিন বায়বহুল ও কাস্টমারদের সাথে রিয়েল টাইম যোগাযোগ সম্ভব নয়।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা ও অসুবিধা
মার্কেটিং কৌশল ও কন্টেন্ট সম্পর্কে আপনার শ্রোতা কী ভাবেন তা প্রত্যক্ষ ভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
লাইক শেয়ার ও কমেন্ট দ্বারা কাস্টমার এটিকে কীভাবে গ্রহন করছে?
আপনি ঠিকঠাক মার্কেটিং কৌশল পরিচালনা করছেন কিনা আপনার কোথায় পরিবর্তন প্রয়োজন সেটি জানা সম্ভব।
ফলাফল নির্দিষ্ট ভাবে পরিমাপ করা যায়।মার্কেটিং কৌশলকে আরও বেশি সফল করে তুলতে পরবর্তী পদক্ষেপ কি নেয়া প্রয়োজন সেটি বোঝা যায়।
চাহিদামাফিক নির্দিষ্ট কাস্টমারদেরকেই কেবল অ্যাড দেখানো যায়।
এতে আপনার খরচ করা অর্থের বিপরীতে সঠিক কাস্টমার অ্যাড দেখতে পায়।
ধরুন, আমি ভাবলাম কেবল ২৫ থেকে ৩০ বছরের মেয়েদের অ্যাড দেখাব তবে কেবল সেই মেয়েদের টার্গেট করেই অ্যাড দেয়া সম্ভব।
অসুবিধার দিকগুলো হচ্ছে, সবাই যখন একটি আদর্শ কাস্টমার গ্রুপকে টার্গেট অ্যাডে দেখাতে চান এতে অনেক সময় কাস্টমার বিরক্ত বোধ করে। ডিজিটাল অ্যাড সময় স্থায়ী এবং ক্রমাগত পরিবর্তনশীল।
কোন ধরনের মার্কেটিং আপনার বিজনেসের জন্য আদর্শ
ট্র্যাডিশনাল ও ডিজিটাল মার্কেটিং এই দুটি ধরনের মার্কেটিং প্রচেষ্টা সমান গুরুত্বপূর্ণ একটি বিজনেসের বেড়ে উঠায়।
শুধু বুঝতে হবে আপনার বিজনেসের জন্য কোনটি আদর্শ। কীভাবে বুঝবেন?
যেমন ধরুন, আপনার বিজনেসের টার্গেট কাস্টমার গ্রুপ যদি তরুনরা হয় তবে ডিজিটাল মাধ্যম আদর্শ।
কারণ তাদের মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিমান বেশি। আবার একটু বয়স্ক মানুষ টেলিভিশন ও পত্রিকায় বেশি সময় দেন। তাদের জন্য ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং প্রয়োজন।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের বিজনেসের প্রাথমিক মূলধনের পরিমান কম থাকে তাই মার্কেটিং করার সময় কম খরচে বেশি আয় করা যায়।
এমন বিজনেসের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং প্রয়োজন।
পরিশেষে,
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কম খরচে এবং পরিমাপযোগ্য উপায়ে এমন এক বিশাল সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন যারা আপনার বিজনেসের জন্য আদর্শ। আপনার টার্গেট কাস্টমার গ্রুপের সম্পর্কে জানুন, পরিকল্পনা করুন, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মার্কেটিং করুন আর বিজনেস বাড়ান।